তিন বছর আগে এই দিনে (৩০ মে) রাজধানীর কলাবাগান থেকে গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার তিন বছর পার হলেও উদঘাটন হয়নি খুনের রহস্য। মামলার তদন্ত কবে শেষ হবে নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, পিবিআই মামলার তদন্ত পাওয়ার পর ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল ডা. সাবিরার স্বামী এ কে এম সামছুদ্দিন আজাদকে শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তবে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত আছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘ডা. সাবিরাকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর চেষ্টা করা হয়’
সর্বশেষ গত ১৬ মে মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এ জন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহাম্মদের আদালত আগামী ১ জুলাই প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। এ নিয়ে ২৯ দফা প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পিছিয়েছে।
এদিকে, বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তদন্ত সংস্থা বলতে পারছে না, খুনের কারণ। তবে আশা করছে, শিগগিরই চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই এর পরিদর্শক মো. জুয়েল মিঞা বলেন, এ মামলায় একমাত্র সন্দেহভাজন আসামি সাবিরার স্বামী সামছুদ্দিন আজাদকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যেসব তথ্য পেয়েছি, সেগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। তবে দ্রুতই তদন্ত কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।
মামলার বাদী সাবিরার ফুফাতো ভাই রেজাউল হাসান মজুমদার বলেন, আমার বোনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। দুইটা ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। তবে তদন্তে কোনো গাফিলতি দেখছি না। পিবিআই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। তিনটি বছর চলে গেলেও আমরা কাঙ্খিত জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হয়নি। আমাদের চাওয়া এ মামলার তদন্ত শেষ করে মূল আসামিদের আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
আরও পড়ুন: ডা. লিপিকে খুন করেছে কারা
২০২১ সালের ৩০ মে সকালে কলাবাগান প্রথম লেনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটের শোবার ঘর থেকে চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান ওরফে লিপির রক্তাক্ত ও দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গলা কাটা, পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও পোড়া ছিল। এ ঘটনায় ১ জুন সাবিরার ফুফাতো ভাই রেজাউল হাসান মজুমদার কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. জামাল হোসেন ভুইয়া বলেন, তদন্তে কোনো অগ্রগতি নেই। ঘটনার ১১ মাস পর ভিকটিমের স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় সামছুদ্দিন আজাদের বিন্দুমাত্র জড়িত থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই। অথচ নিরাপরাধ হয়েও তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে। এখনো তাকে মামলার চাপ নিয়ে চলতে হচ্ছে। আমরা চাই, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটন হোক। যাতে নিরাপরাধ কেউ ভুক্তভোগী না হয়।