‘যারা দস্যুতা ছেড়ে আত্মসমর্পণ করবে তাদেরকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব; কিন্তু যারা দস্যুতা ত্যাগ করবেন না তাদের কাউকে ক্ষমা করা হবে না।’
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা র্যাব-৭ এর সদর দপ্তরে জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ সব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস নির্মূল করতে গিয়ে র্যাবের ৩৩ জন সদস্য জীবন দিয়েছেন। হাজার হাজার র্যাব সদস্য আহত হয়েছেন। অনেকের অঙ্গহানিও হয়েছে। তাই আমরা যে কোনো মূল্যে অপরাধীদের দমন করব। তারা যেন অপরাধ করার চিন্তাও না করে সে কাজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করছে। জলদস্যুতা আপনাদের জীবনে কখনও শান্তি ফিরিয়ে আনবে না। বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন সমস্ত উপকূলীয় অঞ্চলকে আমরা জলদস্যু বা ডাকাত মুক্ত করব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনে জলদস্যুদের ভালো অবস্থা দেখে আজ তারা উদ্বুদ্ধ। সাংবাদিকদের সহযোগিতায় এ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাদের ধন্যবাদ জানাই। উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের সিকিউরিটির জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। ওইসব এলাকায় জলদস্যুরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। আজ এখানে একজন নারী জলদস্যুও আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী লোকেরাও তাদের বাধ্য করেন এসব কাজে জড়াতে। জনগণের কাছে র্যাব একটি আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। সুন্দরবনে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন রক্ষায় ২০১২ সালে র্যাবকে টাস্ক ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। র্যাবের দুঃসাহসিক অভিযানে সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হয়। দস্যুরা যাতে আর সে কাজে ফিরতে না পারে; এ জন্য তাদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে। আজ তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। কেউ ব্যবসা করছে বা অন্য কাজ করছে। পাবনায় ৬০০ ও সিরাজগঞ্জে ৩০০ এর অধিক চরমপন্থি গ্রুপের নেতাকর্মী আত্মসমর্পণ করেছে। তাদেরও সরকার সহযোগিতা করেছে। তবে যাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের মামলা আছে তাদের কোনোভাবে সহযোগিতা করা হবে না। অন্য মামলাগুলো থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়ার জন্য কাজ করা হবে।
এরআগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেন এক নারীসহ ৫০ জন জলদস্যু।
অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আত্মসমর্পণের পর আমরা দস্যুদের দিকে খেয়াল রাখছি। যদি তারা পুনরায় আগের কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের সব সহযোগিতা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমাদের কথার বরখেলাপ করলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ যদি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায়, আমরা তাদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। আজকে যারা আত্মসমর্পণ করছেন সবাইকে আমি স্বাভাবিক জীবনে স্বাগত জানাই। এরআগে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত হওয়ায় পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করছি। সুন্দরবন থেকে আত্মসমর্পণ করা দস্যুদের সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের পেশার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।