শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয়ে বিশ্বকাপ শুরুর পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অন্তিম মুহূর্তে হার। যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরুতেই মিশ্র অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের। সেসব অতীত। সামনে রয়েছে আরো দুই ম্যাচ। সেখানে ভালো করলেই খুলে যাবে সুপার এইটের দুয়ার। সেই দুয়ার খোলার মিশনেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে টিম বাংলাদেশ। সুপার এইটের টিকিট নিশ্চিতে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাত সাড়ে ৮টায় নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সেন্ট ভিনসেন্টে অবস্থিত আর্নোস ভ্যালে গ্রাউন্ডে হবে দুই দলের টি-টোয়েন্টি যুদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রে দুই ম্যাচ খেলার পর বাংলাদেশ দল এখন ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ কতদূর যাবে তা বলা যাচ্ছে না এখনই। তবে পরের সবগুলো ম্যাচই বাংলাদেশকে খেলতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে।
এই ম্যাচ দিয়ে লম্বা সময় পর সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নোস ভ্যাল গ্রাউন্ডের অচলায়তন ভাঙছে। এই মাঠে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিলো ঠিক ১০ বছর আগে। ২০১৪ সালে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ ছিলো বাংলাদেশই। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় নির্বাসিত কিংসটাউনের এই মাঠে। মাঠে হয়নি সিপিএলের কোনো ম্যাচও। এখানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচই হয়েছে স্রেফ দুটি, তাও সেই ২০১৩ সালে। সেই দুই ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান।
লম্বা সময় পর আর্নোস ভ্যাল গ্রাউন্ডে পা পড়ল আন্তর্জাতিক দলের। গতকাল দুই দল অনুশীলন সেরেছে সাগরপারের এই স্টেডিয়ামে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গত আসরেও বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয়েছিল। ব্রিসবেনে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপের মিশন শুরু হয়েছিল। সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে চারবার দুই দল মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশ জিতেছে তিনবার। নেদারল্যান্ডস একবার।
ডি গ্রুপে তিন ম্যাচে টানা জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার আগে সুপার এইটে দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ম্যাচে একটি করে জিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পজিশনে আছে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস। দুই ও তিন ম্যাচে ১ পয়েন্ট করে নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম পজিশনে আছে নেপাল ও শ্রীলংকা।
গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে খেলার কথা ছিল নেপাল-শ্রীলংকার। বৃষ্টির কারণে খেলাটি পরিত্যক্ত হয়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শ্রীলংকার। তিন ম্যাচে তাদের সংগ্রহ মাত্র ১ পয়েন্ট। বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের ম্যাচে তাকিয়ে শ্রীলঙ্কাও। এই ম্যাচে ফল না হলে, ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে লাভ শ্রীলঙ্কার। আর দুই দলের কেউ জিতে গেলে শ্রীলঙ্কার বিদায়ঘণ্টা নিশ্চিত হয়ে যাবে।
টুর্নামেন্টের দুই ম্যাচে ব্যাটিং ভালো হয়নি বাংলাদেশের। টপ ও মিডল অর্ডারে ভয়ডরহীন খেলেছেন কেবল তাওহীদ হৃদয়। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ ফিনিশিংয়ে তুলির আচড় দিয়েছেন। তবে ব্যাটিং নিয়ে গৌরবের কিছুই নেই। বরং দুশ্চিন্তার আছে অনেক কিছু। টপ অর্ডারে রান নেই। মিডল অর্ডারে নেই প্রতিরোধ। শেষ দিকেও ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
ব্যাটিংয়ে পুরো দলকেই মনে হচ্ছে ছন্নছাড়া। এরই মধ্যে দল থেকে বাদ পড়েছেন সৌম্য সরকার। লিটন দাশ একই কাজ করছেন। কিন্তু তাকেও বাদ দিয়ে কাকে খেলাবে সেটাই প্রশ্ন। শান্তর ব্যাটে রানের খরা লম্বা সময় ধরেই। সাকিব ইউটার্নে যাচ্ছে লম্বা সময় ধরেই। বিশ্বকাপ খেলতে এসে পুরো দলের একসঙ্গে বিপর্যয় এমনটা আগে কখনোই হয়নি।
বোলিং বাংলাদেশের আশার দিক। নাসাউ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম বোলিং বান্ধব ছিল। সেটার পুরো ব্যবহার করেছেন বোলাররা। আর ডালাসেও বল হাতে দুর্দান্ত ছিলেন তাসকিন, মোস্তাফিজ, রিশাদরা। তাদের হাত ধরে সাফল্যের এবং পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা থাকবে এমনটাই বিশ্বাস করেন সকলে।
আর্নোস ভ্যালের উইকেট কেমন হবে সেটা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। লম্বা সময় পর ২২ গজের আচরণ কেমন করে সেটাই দেখার। তবে উইকেট যেমন আচরণ-ই করুক, দুই পক্ষের জন্যই সমান সুযোগ থাকবে তা নিশ্চিত। যারা কন্ডিশন এবং উইকেট অনুযায়ী ভালো খেলবে জিতবে তারাই। দুই দলেরই লক্ষ্য সুপার এইট। কারা এগিয়ে যাবে? উত্তরটা পাওয়া যাবে আজ রাতেই। ততক্ষণ পর্যন্ত কেবল অপেক্ষা।