সারা বাংলা

ঈদের আগের রাত নির্ঘুম কাটলো সুনামগঞ্জবাসীর

উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে সুনামগঞ্জের বেশ কিছু এলাকা গত তিনদিন ধরে পানির নিচে। এর মধ্যে, রোববার (১৬ জুন) রাত ১১টার দিকে শুরু হয় অতিভারী বর্ষণ। যা ঝরে সকাল ৯টা পর্যন্ত। এতে জেলার আরও কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ অবস্থায় বন্যা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কেটেছে সুনামগঞ্জবাসীর।

সবার মনে পড়ে যায় ২০২২ সালের কথা। ওই বছরের ১৬ জুন সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছিল। আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে যায় হাজার হাজার ঘরবাড়ি। শহরের উঁচু জায়গার বাড়ির নিচতলায় ছিল কোমর সমান পানি। গ্রামের অবস্থা ছিল আরও ভয়াবহ। সারা দেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। ভেঙে পড়েছিল মুঠোফোন নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা। এছাড়া পুরো জেলা ছিল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।

সেই একই তারিখে সুনামগঞ্জ ফের বন্যার আতঙ্ক দেখা দেয়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত পোস্ট করেন। মাসুদ রানা সোহাগ নামে একজন লিখেন, টানা বৃষ্টি হচ্ছে, তেমন সব নদ-নদীর পানি বাড়ছে। হে আল্লাহ আপনি হেফাজত করুন, যেখানে মানুষ সকাল হলে ঈদের আনন্দ করার কথা। সেখানে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা বাসিন্দা শাকিল আহমেদ বলেন, এত বৃষ্টি আগে কখনো দেখিনি। নদীর পাড়ে বাড়ি হওয়ায় সারারাত ঘুমাইনি। কারণ ২০২২ সালের বন্যার সময় ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। মাঝরাতে বন্যায় ঘর ভেঙে যায়। সেই ভয় এখনও কাটেনি।

পৌর শহরের স্থানীয় বাসিন্দা পিয়াল বলেন, যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছিল খুবই আতঙ্কে ছিলাম। বাড়ির রাস্তায় ইতিমধ্যে পানি চলে আসছে। আর কিছুক্ষণ বৃষ্টি হলে মেইন সড়কও তলিয়ে যেত।

পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস জানায়, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৩৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জের সকল নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা দেখা দিতে পারে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাসেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার মজুদ, উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য নৌকাসহ মাঝি ও আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা আছে।