জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আশ্বাসের পর আজ দিল্লি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আগামী মাসে চীন সফরেও যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সরকার প্রধানের ভারত-চীন সফরে আশায় বুক বেঁধেছে তিস্তা পাড়ের কোটি মানুষ।
শুক্রবার (২১ জুন) দুপুর ১২টায় রংপুর সিটি কর্পোরেশনের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলন করে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি তোলেন তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের নেতারা। তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তফিজার রহমান মোস্তফা।
এসময় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে রসিক মেয়র মোস্তফা বলেন, তিস্তা নদীর সাথে উত্তরাঞ্চলের দুই কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অভাবে এই নদী উত্তরের জনপদে কৃষি অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তাই দুই কোটি মানুষের প্রাণের দাবি তিস্তা প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। এতে তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ লাঘবে এবারের সফরে দীর্ঘসূত্রিতার অবসান ঘটিয়ে আন্তরিক হবেন প্রধানমন্ত্রী এমনটাই আশা।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে তিস্তা নিয়ে আশাবাদী বক্তব্যের পর এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক সফর। তাই আশা করা যায় এই সফর শেষে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েই দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়াও ভারত-চীন অর্থায়ন করতে অসম্মতি জ্ঞাপন করলে নিজস্ব অর্থায়নে হলেও মহাপরিকল্পনাটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাই।
তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙনে তিস্তা গিলে খায় হাজার হাজার একর ফসলি জমি আর বসতি ভিটা। যার বাৎসরিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এ ক্ষতি থেকে বাঁচতে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি তিস্তাপাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের। তাই তিস্তা নিয়ে চীন-ভারতের পারস্পরিক সমঝোতায় ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে, প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে এমন সংবাদের আশায় আছি আমরা। আমরা চাই বঙ্গবন্ধুর কন্যা এবার আর আশ্বাসে ঝুলিয়ে রাখবেন না। দ্বিপাক্ষিক সফর থেকে এসে আগামী শুষ্ক মৌসুমে মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ড. শফিকুল ইসলাম কানু, বখতিয়ার হোসেন শিশিরসহ পরিষদের তিস্তা অববাহিকার অন্যান্য উপজেলার নেতৃবৃন্দ।