বরগুনার আমতলীতে লোহার সেতু ভেঙে কনেপক্ষের ৯ জন নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। এসময় সেতু নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ঠিকাদারের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা দায়সারাভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছেন। নির্মাণের ৫ বছরের মাথায় সেতুর মাঝখানের বিম ভেঙে যায়। গত ১০ বছর ধরে এই ভাঙা সেতুর ওপর দিয়ে হলদিয়া ইউনিয়ন ও চাওড়াসহ উপজেলার অন্তত অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ চলাচল করছিলেন।
আরও পড়ুন: খালে মাইক্রোবাস: নিহতদের ৭ জন একই পরিবারের
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার চাওড়া ও হলদিয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত চাওড়া নদীর ওপর হলদিয়া খাল এলাকায় আয়রণ ব্রীজ নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। সেতুর নির্মাণ কাজ পান হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম মৃধা।
হলদিয়া এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘ঠিকাদার শহীদুল ইসলাম মৃধা দায়সারাভারে সেতুটি নির্মাণে কাজ করেছেন। নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করে লুটপাট করেছেন ঠিকাদার।’
আরও পড়ুন: বিয়ের যাত্রী নিয়ে সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস খালে, নিহত ৯
স্থানীয় বাসিন্দা বায়জিদ হোসেন বলেন, ‘শহিদুল ইসলাম হলদিয়া ও চাওড়া ইউনিয়নে প্রায় ৩০টি সেতু নির্মাণ করেছেন। নির্মাণের ৫ বছরের মধ্যে সব ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। ব্রিজ নির্মাণের নামে লুটপাট করেছে তিনি। আমরা আজ বিক্ষোভ করেছি। সংসদ সদস্য তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমরা কঠোর আন্দোলন করবো।’
বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, ‘এতো কম সময়ে এতো টাকা ব্যয়ে তৈরি ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পেছনে রহস্য আছে। এই দায় ঠিকাদার ও এলজিইডি এড়িয়ে যেতে পারেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। আমি তাদের শান্ত করেছি। জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছি, তদন্ত কমিটি গঠন করতে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, আজ দুপুরে আমতলী উপজেলার হলদিয়া-চাওড়া সড়কে হলদিয়া খালের ওপরে সোহার সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস পানিতে পড়ে যায়। এতে নারী-শিশুসহ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।