হার্দিক পান্ডিয়ার বল নরকিয়ে মিড উইকেটে পাঠিয়ে ১ রানের বেশি পেলেন না। ভারতের ৭ রানের জয় নিশ্চিত হয়ে যায় তাতে। সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে যায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা।
মিড অনে ফিল্ডিংয়ে থাকা রোহিত মাটিতে বসে পরলেন। মুখে বিশাল হাসি। চোখের কোণে জল। বিরাট ফিল্ডিংয়ে থেকেই উল্লাস শুরু করেন। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে মেতে উঠেন আনন্দে। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ভারত জিতে নিয়েছে টি-টোয়েন্টির শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। বেশ কিছু রেকর্ড, পরিসংখ্যান যুক্ত হয়েছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বার্বডোজের ফাইনালের লড়াইয়ে।
এক নজরে সেসবে চোখ দেয়া যাক,
* বিশ্বকাপের শুরু থেকে ফাইনাল পর্যন্ত কোনো ম্যাচ ভারত হারেনি। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে তারা। একমাত্র দল হিসেবে ভারত এখন পর্যন্ত অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড গড়েছে।
* ১১ বছর পর ভারত জিতেছে কোনো বৈশ্বিক শিরোপা। সবশেষ ২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছিল ভারত। এরপর ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেললেও শিরোপা পায়নি।
* ভারত দ্বিতীয়বার জিতল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০০৭ সালে মাহেন্দ্র সিং ধোনির দল পেয়েছিল প্রথম শিরোপা। ১৭ বছর অপেক্ষার পর দ্বিতীয় শিরোপার দেখা পেল রোহিত শর্মার দল।
* বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের হয়ে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। মাত্র ২০ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন হার্দিক।
* ক্ষুরদার বোলিংয়ে বিশ্বকাপে এক আসরে সেরা বোলিং ইকোনমির রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ। ৪.১৭ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন ডানহাতি পেসার। এর আগে সুনীল নারিন ২০১৪ সালে ৪.৬০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন।
* ফাইনাল ম্যাচ জিতে রোহিত শর্মা ফিফটির দেখা পেয়েছেন। এটা অন্যরকম এক ফিফটি। ভারতকে ৫০ জয় উপহার দিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত। এই তালিকার দুইয়ে আছেন পাকিস্তানের বাবর আজম। তার জয় ৪৮টি।
* টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর আগে কেবল তিনটি দল একটি করে ম্যাচ হেরেছিল। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা, ২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ২০১৪ সালে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা এই তালিকায় লিখাল নাম। ফাইনালের আগে তারা সবকটি ম্যাচে জয় পেয়েছিল। ফাইনাল হেরে সব হারাল তারা।
* ক্রিকেট বিশ্বের মাত্র তিনটি দল দুইবার করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে। ভারত আজকের আগে ২০০৭ সালে জিতেছে। ইংল্যান্ড ২০১০ ও ২০২২ সালে জিতেছে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১২ এবং ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টির শিরোপা পেয়েছে।
* এবার ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছেন জসপ্রিত বুমরাহ। ৪.১৭ ইকোনমিতে ১৫ উইকেট পেয়েছেন বুমরাহ। বিরাট কোহলির পর ভারতের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার পেলেন বুমরাহ।
* বিরাট কোহলি ৭৬ রানের ইনিংস খেলে পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটি তার ষোলোতম ম্যাচ সেরার পুরস্কার। বিরাট পেছনে ফেলেছেন সূর্যকুমার যাদবকে। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ১৫টি ম্যাচে সেরা হয়েছেন।
* টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে এ নিয়ে তৃতীয়বার রান ডিফেন্ড করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড হলো। ২০০৭ সালে যোগিন্দর শর্মা শেষ ওভারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সুনীল নারিন ১৯তম ওভারে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছিলেন। ১২ বছর পর ভারত আবার জিতল রান ডিফেন্ড করে। এবার হার্দিক পান্ডিয়া শেষ ওভারে জিততে দেননি দক্ষিণ আফ্রিকাকে।