সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ করেছে।
বুধবার (০৩ জুলাই) দুপুরে বাকৃবি ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল করে। পরে জব্বারের মোড় দুপুর সোয়া ১টা থেকে এক ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করে রাখে। এ সময় ঢাকা থেকে ময়মনসিংহগামী মহুয়া কমিটার ট্রেনটি লাল কাপড় দেখিয়ে আটকানো হয়। ফলে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি চাকরিতে আমরা কোনো ধরনের বৈষম্য চাই না। কোটা পদ্ধতি বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। প্রকৃত মেধাবীরা চাকরিতে আসুক।’
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেনের সুপারভাইজার সারোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা লাল কাপড় টানিয়ে ট্রেন থামাতে বাধ্য করে। পরে প্রায় এক ঘণ্টা ট্রেনটি দাঁড়িয়ে থাকে। এতে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ে।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার উপরিদর্শক দীপক পাল বলেন, এক ঘণ্টা রেলপথ অবরোধের পর শিক্ষার্থীরা সরে গেলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ পদ সংরক্ষিত ছিল। ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান আন্দোলনকারীরা। পরে সেই বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটি চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে গত ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছেন।