উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে টাঙ্গাইলে যমুনা নদীসহ জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি কয়েকদিন ধরে বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। লোকালয়ে পানি ঢুকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নদীতীরবর্তী এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা।
শুক্রবার (০৫ জুলাই) সকালে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ও ঝিনাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ভুঞাপুর, কালিহাতী ও সদর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ভাঙনের পাশাপাশি তলিয়ে গেছে ফসলী জমি। লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় বিপাকে পড়েছে মানুষ।
এদিকে নদীর পানি বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করার পর বন্যা কবলিত হওয়ার পাশাপাশি সাপের আতঙ্কে রয়েছে পানিবন্দি মানুষগুলো। বিশেষ করে রাসেলস ভাইপার সাপের কারণে বেশি আতঙ্কিত তারা।
অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জেলার ভুঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসীর কষ্টাপাড়ার ঘোষপাড়া এলাকায় যমুনা নদীর পানি প্রবেশ করেছে। এতে ওই এলাকার অর্ধশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া গোবিন্দাসী বাজারে পানি প্রবেশ করায় বেকায়দায় পড়েছে ব্যবসায়ীরা। বাজারের খালটি ময়লা ভরাটের কারণে পানি বাজারে ঢুকেছে। এছাড়াও গত বুধবার জেলার কালিহাতী উপজেলার দুর্গাপুরে পাঁকা সড়ক ভেঙে পানি ঢুকছে লোকালয়ে।
গোবিন্দাসী বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারের পানি প্রবেশ করেছে। খালটি যদি দখল মুক্ত আর ময়লা আবর্জনায় ভরাট না থাকতো তাহলে পানি বাজারে উঠতে পারতো না। পানি তার গতিপথ বাঁধাগ্রস্ত হয়ে বাজারে প্রবেশ করেছে।
এদিকে কালিহাতির দুর্গাপুর ইউনিয়নে একটি পাকা সড়ক ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিন দিন আগে পাকা সড়কটি ভেঙে যায়। এতে করে ইউনিয়নের দুই শতাধিক বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। অনেকের দুর্ভোগ বাড়ছে।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশীদ বলেন, গোবিন্দাসী বাজারের একাংশসহ কষ্টাপাড়া এলাকায় পানি উঠেছে। এছাড়া নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক নজরদারী রাখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম বলেন, উজানের পানি নেমে আসায় ভাঁটিতে পানি ধীরে ধীরে বাড়ছে। ভূঞাপুরের অর্জুনা ইউনিয়নের কিছু ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। পার্শ্ববর্তী নিকরাইল ও গাবসারা ইউনিয়ন আজকালের মধ্যে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বন্যার্তদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রস্তুত আছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।