নাটোরের গুরুদাসপুরে বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। গভীর রাতে চুরি করে নিয়ে যাওয়া মিটারের স্থানে চোররা পলিথিনে মুড়িয়ে রেখে যায় চিরকুট। যাতে লেখা ছিল, ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন।’ চিরকুটে থাকা নম্বরে কল করলে টাকা চাওয়া হয়। বিকাশ ও নগদ নম্বরে টাকা নিয়ে মিটার কোথায় পাওয়া যাবে সে স্থানও বলে দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের মতে, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলা পৌর সদরের গারিষাপাড়া, গোপালের মোড়সহ কয়েকটি মহল্লা থেকে প্রায় ৩৬টি বৈদুতিক মিটার চুরি হয়। চোর চক্রের সদস্যরা প্রকাশ্যে মোবাইল নম্বর দিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ তাদের ধরতে পারেনি।
গারিষাপাড়া মহল্লার চাতাল ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান জানান, তার এলাকায় মিটার চুরির ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। আজই প্রথম তার মিটার চুরি হয়েছে। সকালে তিনি চাতালে এসে দেখেন মিটার নেই। তবে মিটারের নিচে পলিথিনে মুড়িয়ে থাকা একটি চিরকুট দেখতে পান। চিরকুটের ভেতরে একটি কাগজে লেখা ছিলো, ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন’। নিচে একটি নম্বর দেওয়া ছিলো। নিজের মোবাইল ফোন থেকে নম্বরটিতে কল দিলে বন্ধ দেখায়।
তিনি আরও জানান, প্রতিবেশীরা তাকে বলেছেন, দুপুরের পরে কল দিতে। কারণ তারা সারারাত চুরি করে এখন ঘুমাচ্ছেন। মিটার চুরির ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তিনি জানতে পারেন, শুধু তার একার নয়, আশপাশ এলাকা থেকে প্রায় ৩৬টি মিটার চুরি হয়েছে রাতে। এ ঘটনায় পল্লি বিদ্যুৎ অফিসে খবর দিলে তারা এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
মিটার চুরি যাওয়া আরও এক চাতাল মালিক রবিউল করিম জানান, ‘মিটার চুরির ঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরে চাতাল ব্যবসায়ী, মিল কারখানা ব্যবসায়ীদের মিটার চুরি হচ্ছে। বিকাশে ৪-৫ হাজার টাকা দিলে মিটার ফেরত দেয়। তার মিটারটি এর আগেও একবার চুরি হয়েছিলো। সেবার মিটারের নিচে রেখে যাওয়া নম্বরে কল দিলে বিকাশ নম্বর দেয়। সেই নম্বরে ৪ হাজার টাকা পাঠিয়েছিলেন তিনি। তারপর চোরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, নদী তীরবর্তী স্থান থেকে মিটার সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।
এ বিষয়ে নাটোর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২ (গুরুদাসপুর জোনাল অফিস) এর ডিজিএম মো. মোমিনুর রহমান বিশ্বাস জানান, তাদের তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার গোপালের মোড় থেকে ১৩টি মিটার চুরি হয়েছে। তার বেশিও হতে পারে। বৃষ্টির কারণে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করা যায়নি। চুরির পর প্রকাশ্যে মোবাইল নম্বর দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। ক্ষতিগ্রস্ত সব গ্রাহককে থানা পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে সবাইকে সতর্ক করা হচ্ছে।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জল হোসেন বলেন, এখনও কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।