খেলাধুলা

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে দিলো জিম্বাবুয়ে

গত শনিবার এমনই এক দিনে বার্বাডোজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ভারত জিতে নেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। অথচ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভারতকে টি-টোয়েন্টিতেই হারিয়ে চমকে দিলো জিম্বাবুয়ে।

হারারেতে দুই দলের তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ভারত হেরেছে ১৩ রানে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে এটি জিম্বাবুয়ের তৃতীয় জয়। এর আগে ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে ভারতকে হারারেতেই হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ৮ বছর পর তাদের জয়ের নায়ক পেসার টেন্ডাই চাতারা। ৩.৫ ওভারে ১৬ রানে ৩ উইকেট নেন ডানহাতি পেসার।

জাতীয় দলের মোড়কে ভারত ‘এ’ দলটাই পাঠিয়েছে জিম্বাবুয়েতে। বিশ্বকাপের পর পরই সিরিজ হওয়ায় বিশ্রামে সব সিনিয়র ক্রিকেটাররা। বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকা ১৫ জনের কেউ নেই এই দলে। যারা খেলছেন তাদের তিনজনের অভিষেক হয়েছে আজ। তবে ওয়ানডে ও টেস্ট খেলারও অভিজ্ঞতা আছে বাকিদের। ফলে দলটা যে একেবারেই অনভিজ্ঞ তা নয়। এজন্য জিম্বাবুয়ের জয়ের উল্লাসটাও ছিল চোখে পড়ার মতো। হারারের গ্যালারিও মেতে উঠে আনন্দে।

আগে ব্যাটিং করতে নেমে জিম্বাবুয়ে ৯ উইকেটে ১১৫ রানের বেশি করতে পারেনি। জবাবে ভারত আটকে যায় ১০২ রানে। শেষ ওভারে ১৬ রান তাড়ায় ভারত নিতে পারে কেবল ২ রান।

ব্যাটিংয়ে ভারতের শুরুটা ছিল চরম বাজে। পাওয়ার প্লে’তে ২৮ রান তুলতে ৪ উইকেট হারায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। অভিষেক শর্মা শূন্য, রুতুরাজ গায়কোয়াড় ৭, রায়ান পরাগ ২ এবং রিংকু সিং শূন্যরানে আউট হন। অধিনায়ক শুভমান গিল একপ্রান্ত আগলে হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন। তাকে সঙ্গ দিয়েছিলেন ধ্রুব জুরেল। কিন্তু দলকে পঞ্চাশের ঘরও টেনে নিতে পারেননি তারা। জুরেল মাত্র ৬ রান করেন। গিলের ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান।

৪৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ভারত তখন চরম বিপদে। নিজেদের টি-টোয়েন্টির সর্বনিম্ন স্কোর ৭৪ তখনও পেরোয়নি। চিন্তার ভাজ ছিল কপালে। সেখান থেকে ওয়াশিংটন সুন্দর ও আবেশ খান দলের হাল ধরেন। দুজনের অবদানে ভারত সর্বনিম্ন রানের লজ্জা থেকে বেঁচে যায়। আবেশ ১৬ রানে আউটের পর মুকেশ কুমারও তার পথ অনুসরণ করেন। তাতে শেষ ব্যাটসম্যান খলিল আহমেদকে নিয়ে উইকেটে একা হয়ে যান ওয়াশিংটন।

৮৬ রানে ভারতের নবম উইকেট পড়ল তখনও জয় থেকে ৩০ রান দূরে। ওয়াশিংটন হার মানেন না। চেষ্টা চালিয়ে যান শেষ ব্যাটসম্যান খলিলকে নিয়ে। ১৮তম ওভারে লুক জংওয়েকে একটি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যবধান কমান। শেষ ১২ বলে ১৮ রান দরকার ছিল ভারতের। মুজারাবানির করা ১৯তম ওভারে ২ রানের বেশি পায়নি তারা। ফলে শেষ ওভারে দরকার হয় ১৬ রানের।

পেসার চাতারার করা শেষ ওভারের প্রথম বলে কোনো রান পাননি ওয়াশিংটন। দ্বিতীয় বলে শর্ট ফাইন লেগে বল পাঠিয়ে আদায় করেন ২ রান। তৃতীয় ও চতুর্থ বল আবার ডট। পঞ্চম বলে ওয়াশিংটন ক্যাচ দেন মুজারাবানির হাতে। তাতেই অলআউট ভারত। জিম্বাবুয়ে ১ বল আগেই জিতে যায় ম্যাচ।

চাতারার ৩ উইকেট বাদে অধিনায়ক সিকান্দার রাজাও ৩ উইকেট পেয়েছেন। তবে অফস্পিনার রান দিয়েছেন ২৫।

এর আগে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং ছিল সাদামাটা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন সাতে নামা ক্লাইভ মাদান্দে। ২৫ বলে ৪ চারে তার ইনিংসটি সাজান। এছাড়া ডিওন মায়ার্স ২৩, ব্রায়াট বেনেট ২২ এবং ওয়েসলি মাধভেরে ২১ রান করেন।

ভারতের হয়ে বল হাতে ১৩ রানে ৪ উইকেট নেন রবি বিষ্ণোই। ২ উইকেট পেয়েছেন ওয়াশিংটন। লক্ষ্য নাগালে রেখেছিলেন বোলাররা। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ম্যাচটা জেতা হয়নি ভারতের।

আগামীকালই দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে একই মাঠে দুই দল মুখোমুখি হবে।