সারা বাংলা

আয়োজক কমিটির ভুলে রথযাত্রায় দুর্ঘটনা: জেলা প্রশাসক

আয়োজক কমিটির ভুলে বগুড়ার রথযাত্রায় হতাহতের ঘটনা বলে অভিযোগ করেছেন বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। এরপরেও দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান এবং বিদ্যুৎ বিভাগ ও পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) পি এম ইমরুল কায়েসকে। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বছরে দুই দফা রথযাত্রা ও উল্টোরথযাত্রা বের হয়। শহরের রাস্তার ওপরে থাকা বৈদ্যুতিক তারের অবস্থান অনুযায়ী ঠিক কত ফুট উচ্চতায় রথ ওঠানো যাবে, তা আয়োজকদের আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের সেই সতর্কতা সত্ত্বেও ২৫ ফুট উচ্চতায় রথের চূড়া ওঠানো হয়। রথের চূড়া ওঠানো-নামানোর দায়িত্ব ছিল একজনের হাতে। কিন্তু তার ভুলেই ঘটে গেল মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা।’

রথযাত্রা উৎসব আয়োজক কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি অধ্যক্ষ খরাজিতা কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘রথযাত্রার সবকিছু দেখভাল করতে কমিটির পক্ষ থেকে ১০০ জন সেবক নিয়োগ ছিল। সড়কের ওপর বৈদ্যুতিক তারে যেন রথের স্পর্শ না লাগে, এ জন্য রথের চূড়া ওঠানো-নামানোর জন্য দুজনকে দায়িত্ব দেওয়া ছিল। আমতলা মোড়ে ভুলক্রমে রথের চূড়া নিচে নামানোর আগেই বৈদ্যুতিক তারের স্পর্শ লেগে আগুন ধরে যায়। রথে হাত রাখা সবাই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।’

তিনি আরও বলেন, ‘চূড়া ওঠানো-নামানোর দায়িত্বে থাকা অলোক কুমার ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। সুশান্ত দাসের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

প্রসঙ্গত, বগুড়ায় রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪০ জন। রোববার (৭ জুলাই) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বগুড়া শহরের সেউজগাড়ী আমতলা মো‌ড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- অলোক, আতশি রানী, রঞ্জিতা, নরেশ মোহন্ত ও অজ্ঞাত এক নারী।

পুলিশ জানিয়েছে, বিকেল ৫টার দিকে সেউজগাড়ী ইসকন মন্দির থেকে রথযাত্রা বের হয়। সেউজগাড়ী আমতলা এলাকায় পৌঁছালে রথের চূড়াটি সড়কের ওপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে আসে। এতে আগুন ধরে যায়। এ সময় র‌থের ওপরে বসে থাকা এবং নিচে থাকা বহু লোক আহত হন। তাদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান‌ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় আহত হয়ে শহীদ জিয়াউর মে‌ডি‌ক্যাল ক‌লেজ ও হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি আছেন ৩৭ জন। মে‌ডি‌ক্যাল ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আনিস বিষয়‌টি নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন। এ ছাড়া, বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি আছেন আরও ৩ জন। হাসপাতাল‌টির আরএমও শ‌ফিক আমিন কাজল বিষয়‌টি নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।