রাজধানী ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবৈধ দখল ও দূষণের কবলে পড়ে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে ৫২টি খাল। চারদিকে নদীবেষ্টিত কেরানীগঞ্জের খালগুলো একশ্রেণির প্রভাবশালী মহল ভরাট করে দখল করে নিয়েছে। প্রভাব খাটিয়ে এসব খালের দুই পাড়ে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছে প্রভাবশালীরা।
সোমবার (৮ জুলাই) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, আবর্জনা ও ভরাটের ফলে ৬০ ফুট প্রশস্ত খালগুলো এখন বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর শাখা শুভঢ্যা খাল দিয়ে এক সময় সরাসরি মুন্সীগঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু এখন তা রূপকথার গল্পের মতো ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশ খাল বর্তমানে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় খালগুলো এখন রয়েছে অস্তিত্ব সংকটে। কেরানীগঞ্জের অধিকাংশ খাল এখন বিলীনের পথে। শুভঢ্যা, তেঘরিয়া ও পারগেন্ডারিয়াসহ প্রায় সব খাল আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়াও শুভঢ্যা, আটিবাজার ও কলাতিয়া খালের দুই পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অবৈধ বহুতল ভবন। যে যেখানে পেরেছে ভবন নির্মাণ করেছে। ফলে একের পর এক ভবন হেলে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কেরানীগঞ্জের এসব খাল দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। খালের জায়গা ভরাট করে বাড়িঘর ও মার্কেট পর্যন্ত নির্মাণ করেছেন। এখন দেখলে মনে হয় এখানে কোনোদিন খালই ছিল না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একাধিকবার অভিযান চালিয়েও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে পারছে না। ওয়ার্ডভিত্তিক ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় বাসিন্দারা খালগুলোতে বাধ্য হয়ে আবর্জনা ফেলছেন। ফলে খালের পচা পানিতে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়ে নোংরা পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এলাকায় মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ছে। পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু রিয়াদ বলেন, খালগুলো খননের জন্য সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। খালের আশপাশে সব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হবে। অবৈধ স্থাপনাকারী যত শক্তিশালী হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। অতি দ্রুত খালগুলো উদ্ধার করে জলাবদ্ধতা দূরীকরণসহ এলাকাবাসীর সুবিধার্থে সব ধরনের সুব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।