সোনা ও রুপার কারুকাজ এক জোড়া পিস্তল। এতে খোদাই করা আছে নেপোলিয়ন বোনাপার্টের ছবি। সম্প্রতি এই পিস্তল নিলামে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়ে গেছে। তবে নতুন করে আলোচনায় এসেছে নেপোলিয়নের আত্মহত্যা প্রচেষ্টার গল্প। কারণ এই পিস্তল ব্যবহার করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট। তবে ব্যর্থ হয়েছিল সেই প্রচেষ্টা। শেষে নির্বসনে যেতে হয়েছিল তাকে।
ঘটনাটি ঘটেছিল ১৮১৪ সালের এক রাতে। জানা যায়, নেপোলিয়নের বাহিনী তখন বিদেশি শক্তির সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে। পরাজিত হয়ে রাজক্ষমতা ছাড়তে হবে বলে নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন তিনি। এমন কিছু ঘটতে পারে বলে আগেই বুঝতে পেরেছিলেন নেপোলিয়নের এক পরিচারক। তিনিই পিস্তল থেকে বারুদ সরিয়ে রেখেছিলেন। বেঁচে গিয়েছিলেন নেপোলিয়ন। কিন্তু নির্বাসনে যেতে হয়েছিল তাকে।
নেপোলিয়নের ব্যবহৃত সেই পিস্তল প্যারিসের নিলামকারী প্রতিষ্ঠান ওসেনা বিক্রি করেছে। সম্প্রতি পিস্তল দুটি নিলামে ১ কোটি ৮০ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশের মুদ্রায় যা ২১১ কোটি টাকার বেশি। পিস্তলগুলো যিনি কিনেছেন তার নাম গোপন রাখা হয়েছে। জানা যায়, পিস্তল দুটি তৈরি করেছিলেন প্যারিসের বন্দুক নির্মাতা লুইস-মারিন গোসে। পিস্তল দুটির সঙ্গে আরও বিক্রি করা হয়েছে বাক্স, বারুদ রাখার পাত্র ও পিস্তলে বারুদ ভরার দণ্ড। সব মিলিয়ে ধারনার থেকে বেশি দামে বিক্রি করা হযেছে এগুলো। প্রথমে এগুলোর দাম ১ কোটি ৬২ লাখ ডলার ধরা হয়েছিলো। নিলামে দরাদরিতে তা বেড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার ডলারে পৌঁছায়।
ফ্রান্সের নিয়ম অনুযায়ী এগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে গণ্য। তাই সরকার চাইলেই আগামী ৩০ মাসের মধ্যে নতুন মালিকের কাছ থেকেএগুলো কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিতে পারবে। তবে মালিক পিস্তলগুলো বিক্রি করতে না চাইলে সরকার জোরাজুরি করতে পারবে না।
উল্লেখ্য, আত্মহত্যার চেষ্টা করার পরে ১৮১৪ সালে নেপোলিয়নকে ভূমধ্যসাগরের এলবা দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। এর এক বছর পরে ১৮১৫ সালের আবার ক্ষমতায় ফিরেছিলেন তিনি। তবে কিছুদিনের মধ্যেই ‘ওয়াটারলুর যুদ্ধ’ শুরু হয়। এবং তিনি পরাজিত হন। এরপরে আবারও নেপোলিয়নকে নির্বাসনে পাঠানো হয় সেন্ট হেলেনা দ্বীপে। ওই দ্বীপেই নির্বাসনে থাকা অবস্থায় ১৮২১ সালে মৃত্যু হয় নেপোলিয়নের।