প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন। এ দুই আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)।
শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষার্থীদের কেউই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে ফিরতে নারাজ। ফলে বন্ধ হয়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যক্রম। অনেক বিভাগের পরীক্ষা চলছিল, কোনো কোনো বিভাগে পরীক্ষার রুটিনও দেওয়া হয়েছিল। আবার কোনো বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষ করে মৌখিক পরীক্ষার অপেক্ষায় ছিল, কিন্তু আন্দোলনের জন্য মৌখিক পরীক্ষা দিতে পারছে না। এমন নানা সমস্যায় জর্জড়িত শিক্ষার্থীরা। কবে নাগাদ এই আন্দোলন শেষ হবে, তা জানা নেই কারও। এতে করে সেশনজটের কবলে পড়ার আশঙ্কায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে তারা।
এর আগে, গত ১ জুলাই থেকে তিন দফা দাবি নিয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফোডারেশন। বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি এ দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করে যাচ্ছে।
তাদের দাবিগুলো হলো- অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তি ও শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন করতে হবে।
বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ফায়েকুজ্জামান মিয়া বলেন, তিন দফা দাবি নিয়ে আমাদের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আমাদের দাবি পূরণা না হলে শ্রেণিকক্ষে ফেরা হচ্ছে না। আমরা যে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছি, সেটি কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একার না। এ সিদ্ধান্তটি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের।
শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি নিয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড.মো.বশির উদ্দিন বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি চাই না। তবে দাবি পূরণ না হলে বর্তমান কর্মসূচি থেকে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হতে পারে।
অপরদিকে, গত শুক্রবার (৫ জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। প্রথম দিনে গোপালগঞ্জ-ঘোনাপাড়া সড়ক অবরোধ করে। এরপর সোমবার (৮ জুলাই) থেকে সারা দেশের ন্যায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করে বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। এদিন ‘রাষ্ট্র মেরামত চলছে, সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত’- এমন নোটিশ টানিয়ে দেন তারা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত তারা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য, বুধবার (১০ জুলাই) দেশের ৬৪ জেলায় কঠোর কর্মসূচির প্রস্তুতি চলছে। দেশব্যাপী ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিমও গঠন করা হয়েছে।