কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে টানা কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত ঢাকার রাজপথ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আজও স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। বড় বড় পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নিয়ে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এ কর্মসূচির কারণে ভোগান্তি এড়াতে রাস্তায় মানুষ ও যানচলাচল ছিল তুলনামূলক অনেক কম।
বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন মোড়সহ রেলগেটে মহাখালী ও কারওয়ান বাজার রেলগেট অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। এ কারণে বুধবার ঢাকায় তীব্র যানজটের পাশাপাশি দুপুর ১২টা থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যায়নি এবং একটি ট্রেনও ঢাকায় ঢুকতে পারেনি।
দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ফার্মগেট অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পড়ে ৪টা ৫০ মিনিটে ব্লকেড কর্মসূচি শেষে খুলে দেওয়া হয় ফার্মগেটের সড়ক।
ঢাকার তাপমাত্রা আজকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই গরমে বিভিন্ন প্রয়োজনে যারা রাজধানীর রাস্তায় বের হয়েছেন, তাদের জীবন আজ ওষ্ঠাগত।
কাকরাইল থেকে মৌচাক, বিজয়নগর থেকে পল্টন, প্রেস ক্লাব থেকে শাহবাগ কিংবা কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগ—সব রাস্তায় সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে গাড়ি। মানুষ হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
স্কুল ছুটির পর বাচ্চাদের নিয়ে বাসায় ফেরার জন্য যানবাহন পাচ্ছেন না অভিভাবকরা। রিকশা বা সিএনজি অটোরিকশা পেলেও লাভ নেই। রাস্তা তো বন্ধ।
ঢাকার প্রায় সব এলাকার চিত্র আজ একই। পথে পথে অন্তহীন দুর্ভোগে পড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরবাসী।
সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন তারা, যারা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন। রাস্তার মধ্যে আটকা পড়ার পর না পেছনে যেতে পারছেন, না সামনে এগোতে পারছেন।
গাড়ির মধ্যে বসে হাঁসফাঁস করতে দেখা গেছে অনেককে। প্রচণ্ড গরমে গাড়িতে বসে বাচ্চারাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রোদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুড়ছেন মোটরসাইকেলের চালকরাও। মাথায় হেলমেট, গরমে ঘেমে অসহনীয় পরিস্থিতি।
রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো বন্ধ হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে অলি-গলিতেও। সেখানেও প্রচণ্ড রকম যানজট তৈরি হয়েছে। যানজটের কারণে রিকশা বা ইজিবাইকও গন্তব্যে যেতে চাইছে না। এ কারণে জনসাধারণ পড়েছেন আরো ভোগান্তিতে।
শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে আছে পুলিশ। তবে, রাস্তা বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলেও তা নিরসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখা যায়নি।
বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এই কর্মসূচির জন্য জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। তারা সব গ্রেডের সরকারি চাকরিতে কোটা বৈষম্য দূর করে অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম ৫ শতাংশ কোটা বহাল রেখে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবির আন্দোলন করেন।
ছবি: সুকান্ত বিশ্বাস