সারা বাংলা

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তা নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। চরাঞ্চলের বেশির ভাগ ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও চারদিক এখনো তলিয়ে আছে। এ অবস্থায় দুই সপ্তাহ পর গবাদি পশু ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নিয়ে পানি অতিক্রম করে বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন বাঁধসহ উঁচু এলাকায় অবস্থান করা বাসিন্দারা। বানভাসিদের ভাষ্য, শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। 

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ও পাটেশ্বরী পযেন্টে দুধকুমারের পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বানভাসিরা জানান, জেলার ৯টি উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়নের সাড়ে ৪ শতাধিক চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। এসব চরাঞ্চলের কোথাও কোথাও ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। 

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার চরযাত্রাপুরের বাসিন্দা আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা শুধু জানতে পারি, বিভিন্ন চরে রিলিফ (ত্রাণ) দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে দেওয়া হয়নি। শুধু একজন এসে চিড়া-মুড়ি দিয়ে গেছেন। সরকারি কোনো চাল বা অন্য কোনো সহায়তা পাইনি।’

একই উপজেলার চর ভগবতীপুরের আমেনা বেগম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পায়নি। পাশের চরের বাসিন্দাদের ৫ কেজি করে চালের সঙ্গে ডাল দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি।’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় আমার ইউনিয়ন। এখানে ১২দিন ধরে প্রায় ১২ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত। আমি তালিকা করে পাঠিয়েছি। সরকারিভাবে মাত্র ১৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তা মাত্র ১৫০০ পরিবারকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বাকি পরিবারগুলোকে ত্রাণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। আমি বাকি পরিবারগুলোকেও সহায়তা দেওয়ার আবেদন জানিয়েছি।’

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত জেলায় বন্যা কবলিতদের জন্য ৪৮৯ মেট্রিক টন চাল, ৩৫ লাখ টাকা ও ২৩ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’