শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার প্রতিবাদে মিছিল করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে ক্যাম্পাসে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ফটকের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার এবং হামলায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের শাবিপ্রবি শাখা সমন্বয়ক ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল্লাহ গালিব জানান, গতকাল রোববার রাতে তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ হামলা করে। এতে ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন ও গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলামসহ তিনজন আহত হন। তারা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে এমন দাবি করে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ছাত্রীদের আবাসিক হল হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে আসে। বিপরীত দিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সজিবুর রহমান শাহপরাণ হল থেকে একটি মিছিল নিয়ে আসেন।
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে দুই পক্ষ মুখোমুখি হয়। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করেন।
আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘গতকাল আমরা ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল করছিলাম। এসময় খবর পাই, মিছিলে আসতে আগ্রহী হলের কিছু শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগ নেতারা বাধা দিচ্ছেন। তাই আবাসিক ছাত্র হল অভিমুখে যাই আমরা। পথিমধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের মিছিলে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তারা হামলা করে।’
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। সবার কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে। ফুটেজ দেখলেই বুঝা যাবে। আমরা সড়কের পাশে গিয়ে তাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল রোববার রাতে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। কেউ আহত হয়েছে কিনা, শিক্ষার্থীরা এমন কোনো বিষয়ে জানাননি। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, পুলিশ ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের বাইরে অবস্থান করছে। সড়কে কোনো বিশৃংখলা যাতে না হয় সেদিকে নজর রাখছে।