লাইফস্টাইল

দাম্পত্য সম্পর্কে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন

একটি দাম্পত্য সম্পর্ক সুখের হয়ে উঠতে পারে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের চেষ্টায়। দুইজন আলাদা মানুষ একসঙ্গে পথচলার প্রতিশ্রুতি নিয়ে যে যাত্রা শুরু করেছেন তাকে একটি রোমাঞ্চকর ভ্রমণ মনে করুন। এতে একজন আরেকজনের সঙ্গী, বন্ধু, সহযোগী, পরামর্শক আবার দিক নির্দেশক হবার প্রয়োজন হতে পারে। জটিল সমস্যা মোকাবিলায় একজন আরেকজনের হাতটা আরও শক্ত করে ধরার প্রয়োজন হতে পারে। এই সম্পর্কে প্রয়োজন স্নেহ, শ্রদ্ধা আর অপার ভালোবাসা। দাম্পত্য সম্পর্কে আছে উত্থান, আছে পতন। এসব কিছু মেনেই দুইজন মানুষ একসঙ্গে পথ চলতে হয়। দাম্পত্য বিশেষভাবে যা প্রয়োজন সেগুলো জেনে নিন।

স্নেহপূর্ণ স্পর্শ: দাম্পত্যে প্রয়োজন স্নেহপূর্ণ স্পর্শ। কারণ স্পর্শ মানুষের অস্তিত্বের একটি মৌলিক অংশ। শিশুদের উপর গবেষণা পরিচালনা করে দেখা গেছে, স্পর্শ মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়, স্নেহপূর্ণ যোগাযোগে প্রভাব ফেলে। তবে স্পর্শ শুধু শৈশবের জন্যেই প্রয়োজ নয় স্নেহপূর্ণ যোগাযোগ যেকোন বয়সের মানুষের জন্যই প্রয়োজন। এটি শরীরের অক্সিটোসিনের মাত্রা বাড়ায়। 

সুস্থ শারীরিক সম্পর্ক: রোমান্টিক এবং অন্তরঙ্গ শারীরিক সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রী উভয়ের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। কিন্তু অনেক সময় সঙ্গীর যৌন রোগ এই সম্পর্ক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক দম্পতি যৌনতা সম্পর্কে কথা বলা কঠিন বলে মনে করেন। বিশেষ করে যখন যৌন সমস্যা দেখা দেয় তারা বিব্রতবোধ করেন।  সমস্যার সমাধান খুঁজতে সঙ্গীর পরামর্শ নিন। অনেক সময় রোগের তথ্য লুকিয়ে গেলে শারীরিক ঘনিষ্ঠতাকে প্রভাবিত করতে পারে এমনকি আপনাদেরকে আলাদা করে দিতে পারে।

শ্রদ্ধাশীল থাকা: দাম্পত্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে নিতে এক সময় মনে হতে পারে— আমার তো আরও অনেক কিছু পাওয়ার ছিল! ভেতরে ভতরে না পাওয়ার কষ্টগুলো জমাট বাধতে থাকে। তারপর সঙ্গীর প্রতি পুষে রাখা রাগ থেকে আপনি হয়তো অস্বাভাবিক আচরণ প্রদর্শন করতে শুরু করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার উচিত সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করা। এর সঙ্গে এ কথাও মনে রাখতে পারেন যে, সম্পর্ক ভালো রাখতে গেলে অন্যের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার বিকল্প নেই।

উত্থান-পতনের জন্য প্রস্তুত থাকা: এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে প্রতিটি সম্পর্কের মধ্যে উত্থান-পতন রয়েছে। কখনও কখনও আপনার অনেক সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে হতে পারে। যেমন পরিবারের একজন ঘনিষ্ঠ সদস্যের মৃত্যু কিংবা  চাকরি হারানো বা  গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক সময় আর্থিক অবস্থা এবং সন্তান লালন-পালনের বিষয়টি পারিবাকির সম্পর্ক জটিল করে তোলে। এসব পরিস্থিতিতে মেজাজ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করুন। চাপ, রাগ এবং হতাশা পরিচালনার স্বাস্থ্যকর উপায় খুঁজুন যা পারিবারিক সম্পর্ক সুস্থ্য রাখতে পারে। জোর করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করলে আরও বেশি সমস্যা হতে পারে। প্রতিটি মানুষ তাদের নিজস্ব উপায়ে সমস্যা সমাধানে কাজ করে। সম্পর্কের অবনতি মোকাবিলায় একটি সাধারণ নিয়ম হচ্ছে, আপনার সম্পর্কের প্রাথমিক পর্যায়ে যা যা ঘটেছিল সেগুলো ফিরে দেখতে হবে। সেই মুহূর্তগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারেন, যা আপনাদের দুজনকে একত্রিত করেছে। যে বিন্দুতে আপনি আলাদা হতে শুরু করেছেন তা পরীক্ষা করুন এবং সেই প্রেমের অভিজ্ঞতাকে পুনরায় জাগিয়ে তুলতে আপনি কীভাবে একসাথে কাজ করতে পারেন তার সমাধান করুন। পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত হন। জীবনে পরিবর্তন আসবেই। যেকোন সম্পর্কে পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য নমনীয়তা অপরিহার্য, এবং এটি আপনাকে ভাল এবং খারাপ উভয় সময়ে একসাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে সহায়তা দেয়। 

নিজেদের সম্পর্ক উন্নয়নের বাইরের সাহায্যের প্রয়োজন হলে, একসাথে যোগাযোগ করুন। বিশ্বস্ত বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। বিভিন্ন অ্যাপে দাম্পত্য সম্পর্ক সমাধানের উপায় খুঁজতে পারেন। মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। 

তথ্যসূত্র: হেল্পগাইড অবলম্বনে