সারা বাংলা

৯ ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে মেধাবী ছিলেন আবু সাঈদ 

রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে বুকে গুলি খেয়ে নিহত হয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৩)। তিনি ছিলেন পরিবারের সবার ছোট। ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আবু সাঈিই কেবল পড়াশোনা এগিয়ে নিয়েছেলন। নয় ভাই-বোনের মধ্যে তার শিক্ষাজীবনই ছিল সবচেয়ে উজ্জ্বল।

সাঈদের এক ভাই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন, অন্যরা পড়েছেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যন্ত। তাই পুরো পরিবারের স্বপ্ন ছিল আবু সাঈদকে ঘিরে। তাই পরিবারের সবার উপার্জন দিয়ে তাকে এতদূর পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে এসেছে।

সাঈদ খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। রংপুর সরকারি কলেজ থেকে একই ফলাফল নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। 

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) আদরের ছোট ভাইকে হারিয়ে হতভম্ব বড় ভাই রমজান। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা মকবুল হোসেন শারীরিক অসুস্থতায় শয্যাশায়ী। পরিবারের সবার উপার্জন দিয়ে তাকে এতদূর পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে নিয়ে এসেছি। একদিন সে অনেক বড় হবে, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে সে আশা ছিল।’

নিহতের ছোট বোন সুমির আর্তনাদে আকাশ বাতাশ ভারী হয়েছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘হামার ভাইকে ওরা মেরে ফেলল ক্যান? হামার ভাই বেঁচে থাকলে হামার স্বপ্ন পূরণ হতো।’ 

সাঈদের মা মনোয়ারা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন আর নির্বাক হয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকছেন। মাঝে মাঝে বাবা বাবা বলে ডাকছেন আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন।

ছেলেকে হারিয়ে বাবা মকবুল হোসেন নির্বাক হয়ে পড়েছেন। কোনো কথা নেই তার মুখে। স্থির দৃষ্টিতে কেবল তাকিয়ে রয়েছেন।

আবু সাঈদ কোটা আন্দোলনে বেরোবি ক্যাম্পাসের সমন্বয়কদের একজন ছিলেন। মৃত্যুর সময় বুকে গুলিবিদ্ধসহ দেহে ছররা গুলির অসংখ্য চিহ্ন ছিল তার।