ক্যাম্পাস

‘যারা অধিকার হরণের পক্ষে, তারাই এ যুগের রাজাকার’

‘সুবিচারের পক্ষে যারা দাঁড়ানোর সাহস রাখেন, তারা প্রতেকেই এ সময়ের মুক্তিযোদ্ধা। ৭১ এ গিয়ে আর মুক্তিযুদ্ধ করার সুযোগ নেই। তাই এ সময়ে মানুষের অধিকার আদায়ে যারা দাঁড়িয়েছেন, তারা মুক্তিযোদ্ধা। আর মানুষের অধিকার হরণের পক্ষে যারা দাঁড়িয়েছেন, তারা প্রত্যেকে এ যুগের রাজাকার।’

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বেলা ১২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ এবং দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব এসব কথা বলেন। রাবির বুদ্ধিজীবী চত্বরে নিপিড়নবিরোধী ছাত্র-শিক্ষক ঐক্যের ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়।

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিত অন্তরের সঞ্চালনায় তিনি আরও বলেন, আমি সারাজীবন লেখাপড়া ও গবেষণা নিয়ে থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাকে এখানে এসে দাঁড়াতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপেক্ষা করে এ রাষ্ট্র চলবে না। শিক্ষার্থীরা সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে। আমাদের রাজনীতি সচেতন হওয়া দরকার।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা যখনই তাদের অধিকারের কথা বলেন, তখনই তাদেরকে রাজাকার বলা হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে দূরে সরানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের সন্ত্রাসী লীগ দ্বারা শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনের নমুনা রংপুরের আবু সাইদ থেকে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাই।

আরবি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইফতেখার আলম মাসুদ বলেন, এই ফ্যাসীবাদী সরকার শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি থেকে দূরে সরানোর জন্য ইউজিসিকে ব্যবহার করেছে। তাদের পেটুয়া বাহিনী দ্বারা শিক্ষার্থীদের উপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বুকে তারা গুলি চালিয়েছে। এমনকি দলের সাধারণ সম্পাদক তার বক্তব্যে স্পষ্ট বলেছেন, শিক্ষার্থীদের দমিয়ে রাখতে আমার সন্ত্রাসী লীগই যথেষ্ট। সন্ত্রাসী লীগের এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে আমরা নিপীড়নবিরোধী শিক্ষক সমাজ সবসময় পাশে থাকবো। সরকারের কাছে অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলন মেনে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

নাগরিক ছাত্রঐকের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পুলিশ দিয়ে হামলা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে দাস হয়ে গেছে, এটাই এ ছত্রভঙ্গের নমুনা। আমরা দেখছি তারা এই দাস প্রথা থেকে বের হতে পারবে না। কারণ তারা একটি দলের তাবেদার করে যাচ্ছে। কৃতদাস হয়ে যাওয়া মানুষ কখনো ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতে পারে না,  বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কথা বলতে পারে না। এজন্য অধিকার আদায়ের জন্য এই শিক্ষার্থীদেরই লড়াই করতে হবে।