দেহঘড়ি

ফুসফুসের শক্তি বাড়ানোর বৈজ্ঞানিক উপায়

ফুসফুসের শক্তি কমে এলে তা পুনরুদ্ধারের প্রয়োজন পড়ে। এ জন্য ‘বিরতি ব্যয়াম’ নামে একটি কৌশল রয়েছে। এ ছাড়া গভীর শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণের মাধ্যমেও ফুসফুসের শক্তি বাড়িয়ে তোলা যায়। পালমোনোলজিস্ট ডা. লাধানির পরামর্শ অনুযায়ী আমরা জানিয়ে দিচ্ছি ফুসফুসের শক্তি বাড়ানোর কয়েকটি বৈজ্ঞানিক উপায়।

গভীর শ্বাসের ব্যায়াম

ফুসফুসের ক্ষমতা এবং শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম অপরিহার্য। নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে। এই ব্যায়াম অক্সিজেন গ্রহণ এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগের ক্ষমতা বাড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস ডায়াফ্রাম এবং আন্তঃকোস্টাল পেশীকে শক্তিশালী করে। যা শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা এবং ফুসফুসের ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে পারে, শিথিলতা বাড়াতে পারে এবং উদ্বেগ কমাতে পারে। এগুলো সবই ভালো শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরন এবং ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়িতে তোলে। শ্বাস গ্রহণের সময় আপনার নিচের পাঁজরের খাঁচা প্রসারিত করুন এবং ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে আপনার নাক ব্যবহার করুন। তারপর পাঁচ সেকেন্ড দম ধরে রেখে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন— এই প্রক্রিয়ায় ফুসফুসের শক্তি বাড়ান।

নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার সময় মুখ বন্ধ রাখা

ধীরগতিতে এবং নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে নাক দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস গ্রহণ করতে হবে। এই সময় ঠোঁট বন্ধ রাখতে হবে। এভাবে শ্বাস গ্রহণ করলে শ্বাসনালী দীর্ঘ সময়ের জন্য খোলা থাকে। এতে আপনার ফুসফুসে এবং বাইরে বায়ুপ্রবাহ সহজতর করতে পারে।

বিরতি ব্যায়াম

যদি ব্যায়াম করার সময় শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন তাহলে ব্যয়াম করার কৌশল পরিবর্তন করতে পারেন। যাকে বিরতি ব্যায়াম বা বিরতি প্রশিক্ষণ বলা হয়। যেমন আপনি এক বা দুই মিনিট দৌড়াতে পারেন তারপর দুই মিনিটের জন্য ধীরে ধীরে হাঁটতে পারেন। এভাবে একবার হেঁটে একবার দৌড়ে আপনি ৩০ মিনিট চেষ্টা চালিয়ে আপনার ব্যায়াম শেষ করতে পারেন। এতে ফুসফুসের শক্তিকে পুনরুদ্ধার করতে পারবেন। 

ধূমপান বন্ধ করুন

ফুসফুস ভালো রাখতে হলে ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। ধূমপান নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ফুসফুসের কার্যকারিতা হ্রাস করে। ধূমপান ত্যাগ করে ফুসফুসের পতনকে ধীর করে দিতে পারেন। ফুসফুসের ক্ষমতা উন্নত করতে, পালমোনারি রোগ এবং ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে ধূমপান ত্যাগ করা উচিত। এজন্য আপনি একজন থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে পারেন এবং অধূমপায়ীদের সাথে আড্ডা দিতে পারেন।

ভিটামিন ডি গ্রহণ

ভালো ভিটামিন ডি গ্রহণ নিশ্চিত করা ফুসফুসের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। এটি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারে। যেমন ফ্লু এবং নিউমোনিয়া। যা সাময়িকভাবে ফুসফুসের ক্ষমতা কমাতে পারে। ভিটামিন ডি পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উৎস সূর্যালোক। এ ছাড়া ডিমের কুসুম খেতে পারেন। 

এসব নিয়ম মেনে চলার সঙ্গে সঙ্গে বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস গ্রহণ প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূষিত বায়ু ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। ফুসফুসের অ্যালার্জি এবং জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। উল্লেখ্য, ব্যক্তির বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসের ক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই কমে আসে। তবে এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করলে ফুসফুসের কার্যকারিতা এবং সামগ্রিকভাবে ফুসফুসের ভালো স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা যায়।

তথ্যসূত্র: হেলথ শর্টস