সাতসতেরো

ভূতের দ্বীপে মানুষের বিয়ে!

ভূতের দ্বীপে যাতে মানুষের বিয়ের আয়োজন করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। বলে রাখা ভালো, ভূতে বিশ্বাস শুধু বাঙালিই করে না ব্রিটিশরাও করে। এই যে দ্বীপের ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে চারিদিকে ছড়ানো নীলাভ সবুজ জলরাশি। মাঝে ছোট্ট একটি দ্বীপ। দ্বীপের সুপ্রাচীন ভবন এখনও জৌলুস ধরে রেখেছে। সবুজ গাছগাছালিতে ছাওয়া এই দ্বীপটি প্রায় ২০০০ বছর আগে আধুনিকতার ছোঁয়া পায়। 

প্লাইমাউথ থেকে মাত্র ৬০০ গজ দূরে, শত শত বছর ধরে একটি সামরিক প্রতিরক্ষা হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। ১৮ শতকের কামানগুলো এখনও অবস্থানে রয়েছে। এখানে ‘স্প্যানিশ আর্মাডা’ কখনো আসেনি।  নথি থেকে জানা যায়, এই দ্বীপে দুর্গ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ১১৩৫ সালে। ধারণা করা হয় দ্বীপে বসবাস করে ১৫টি ভূত! যারা এক সময় সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। দ্বীপে রাখা আছে কয়েকটি কামান। দ্বীপের নাম ড্রেকস আইল্যান্ড। ইংরেজ অভিযাত্রী স্যার ফ্রান্সিস ড্রেকের নামানুসারে এই দ্বীপের নাম। ফ্রান্সিস ১৫৭৭ সালে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করতে যাত্রা শুরু করেছিলেন।যাইহোক, এটি ইংল্যান্ডের ডেভন উপকূলে অবস্থিত। দ্বীপটির রয়েছে নিজস্ব সৈকত। দুর্গ ভেঙে এখানে গড়ে উঠবে বিলাশবহুল হোটেল। দ্বীপের মালিক এরই মধ্যে অনুমতিও পেয়ে গেছেন। দ্বীপের মালিক স্থানীয় ব্যবসায়ী মারগান ফিলিপস ২০১৯ সালে ৭৭ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারে (প্রায় ৯০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ) এটি ক্রয় করেন।

নৌকায় ড্রেকস আইল্যান্ডে যেতে সময় লাগে মাত্র ১০ মিনিট।। যদিও বিক্রির জন্য দ্বীপটির কোনো মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এই দ্বীপ সংস্কার করতে প্রায় ৩ কোটি ২২ লাখ ডলার (প্রায় ৩৭৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা) খরচ করতে হবে। দ্বীপটি বিক্রির দায়িত্বে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী প্রপারটি কনসালট্যান্সি অ্যান্ড এস্টেট এজেন্ট ‘কার্টার জোনাস’-এর আলী রানা। 

শুরুতেই দ্বীপের ১৫জন ভূত নিয়ে কথা হচ্ছিল। এরা আসলে সবাই সাবেক সেনা সদস্য। তারা ছিলেন ব্রিটিশ সেনা। দ্বীপের মালিক মনে করেন, তারা যখন জীবিত ছিরেন তখনও সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করেছেন এখনও তাই করে যাচ্ছেন। তিনি নাকি সেখানে এমন কিছু দেখেছেনও। তিনি মনে করেন তারা আছেন তবে এ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারবেন না।

রানা জানিয়েছেন, সংস্কারের পরে এই দ্বীপটিতে বিয়ের আয়োজন করা যেতে পারে। অর্থাৎ ওয়েডিং ডেস্টিনেশন হিসেবে ড্রেকস আইল্যান্ডটি ব্যবহার করা হবে।

যিনি দ্বীপটি কিনবেন হোটেল, রেঁস্তোরা, ক্যাফে বানানোর জন্য তার আলাদা করে অনুমতি নিতে হবে না। চাইলেই তিনি এই দ্বীপটিকে ওয়েডিং ডেস্টিনেনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারবেন। এর জন্য প্রয়োজন হবে শুধু পর্যাপ্ত বাজেট।

ভয় পাওয়ার কারণ নেই তখন এই দুর্গ, কামান কিছুই থাকবে না তবে ভূতগুলো থাকবে কিনা বলা যাচ্ছে না!

তথ্যসূত্র: স্কাই নিউজ