ফটো ফিচার

ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়ে, বিচ্ছেদের পর চিকিৎসা পেশায় ব্যস্ত অভিনেত্রী

মডেল-অভিনেত্রী অদিতি গোভিত্রিকর। ১৯৭৪ সালের ২১ মে মহারাষ্ট্রের পানভেলে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সেখানে বাবা-মা, ভাই-বোনের সঙ্গে থাকতেন তিনি। মুম্বাইয়েই স্কুল-কলেজের পাঠ চুকান। ১৯৯৭ সালে এমবিবিএস পাস করেন এই অভিনেত্রী।

কলেজের পড়াশোনা শেষ করার পর মডেলিং জগতে পা রাখেন অদিতি। একের পর এক সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ের মুকুট পরতে থাকেন তিনি। ২০০১ সালে বিবাহিত নারীদের নিয়ে একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে জয়ের মুকুট পরেন অদিতি। শুধু তাই নয়, অদিতি প্রথম ভারতীয় বিবাহিত নারী যে, বিশ্বসুন্দরীর খেতাব লাভ করেন।

 মডেল হিসেবে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যান অদিতি। পরে বিভিন্ন খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে মডেল হন। বলিউড অভিনেতা হৃতিক রোশানের সঙ্গে বিজ্ঞাপনে অভিনয় করে আরো জনপ্রিয়তা লাভ করেন অদিতি। পাকাপাকিভাবে অভিনেত্রী হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার এগিয়ে না নিয়ে যাওয়ার জন্য এখনো আফসোস করেন অদিতি। এক সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েছিলেন তিনি।

খারাপ অভিজ্ঞতার কারণে অভিনয়ের সুযোগ হারিয়েছিলেন অদিতি। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি একটি সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেই প্রতিযোগিতায় বিচারকের আসনে ছিলেন যশ চোপড়া। আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অতীতের অভিজ্ঞতা এত খারাপ ছিল যে, আমি ভয় পেয়ে যাই। যার জন্য আর দেখা করতে যাইনি।’

ব্যাখ্যা করে অদিতি বলেছিলেন, ‘আমি যশ চোপড়ার অফিসে খবর পাঠিয়েছিলাম যে, অভিনয়ের প্রতি আমার কোনো আগ্রহ নেই। তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। এখন ভাবি যে, কি বোকামি করেছিলাম। এটা আমার জীবনের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। আসলে আমার মনে ভয় ছিল। কাস্টিং কাউচ নিয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা ছিল আমার। কীভাবে সেগুলো সামলাতে হয় তা জানতাম না। অডিশন দিতে যাওয়ার সময় প্রতিদিন আমার সঙ্গে মায়ের যাওয়া সম্ভব ছিল না। একা যেতে ভয় লাগত। তাই এড়িয়ে গিয়েছিলাম।’

পরে অদিতি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির লোকজন পেশাদার এবং সেখানে নাকি ‘কাস্টিং কাউচ’ নিয়ে রাজনীতিও কম হয়। সেই খোঁজ পেয়ে দক্ষিণী ফিল্মজগতের মাধ্যমে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন অদিতি। ১৯৯৯ সালে তেলুগু ভাষার ‘থাম্মুড়ু’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন তিনি। এতে পবন কল্যাণের বিপরীতে অভিনয় করেন তিনি।

২০০২ সালে হিন্দি ভাষার সিনেমায় প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান অদিতি। ‘সোচ’ সিনেমায় সঞ্জয় কাপুর, রাভিনা ট্যান্ডন, আরবাজ খান, ড্যানির সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি। এ সিনেমায় অভিনয়ের পর ‘১৬ ডিসেম্বর’, ‘বাজ’, ‘ধুন্দ’, ‘ভিক্টোরিয়া নাম্বার ২০৩’, ‘ভেজা ফ্রাই টু’, ‘হাম তুম শাবানা’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেন অদিতি।

শুধু তাই নয় বলিউড বাদশা শাহরুখ খান অভিনীত ‘পহেলি’ এবং অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘দে দানা দান’ সিনেমার গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন অদিতি। কিন্তু ধীরে ধীরে অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন এই অভিনেত্রী। ১৯৯৮ সালে ডা. মুফাজ্জলকে বিয়ে করেন অদিতি। এজন্য ধর্মান্তরিত হন তিনি। বিয়ের এক বছরের মাথায় কন্যাসন্তানের মা হন অদিতি। ২০০৭ সালে জন্ম হয় পুত্র জিহানের। কিন্তু সংসার জীবনে ভাঙন ধরে অদিতির। ২০০৯ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাদের। যদিও বিবাহবিচ্ছেদের কারণ জানাননি কেউই। সংসার ভাঙার পর নিজেকে চিকিৎসা সেবায় ডুবিয়ে দেন অদিতি। তবে ব্যক্তিগত জীবনে এখনো একা ৫০ বছর বয়সি এই অভিনেত্রী।