ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারবিরোধী হিসেবে মাঠে নেমেছেন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অতীতে যিনি রাজনৈতিক দল খুলে ওয়ান-ইলেভেনে সাড়া পাননি, যার বিরুদ্ধে মামলা চলমান, যিনি পদ্মাসেতু নির্মাণে বিরোধিতা করেছেন, তিনি আবার সক্রিয়। আগে গোপনে করেছেন। এবার তিনিও এসেছেন।
তিনি বলেন, আজকে ইউনূস কত নির্লজ্জ, তিনি ভারতকে অনুরোধ করেন শেখ হাসিনাকে থামাতে। শেখ হাসিনা আক্রান্ত, আক্রমণকারী নন, তাকে থামাবে কেন? আক্রমণকারীদের থামান। যাদের সঙ্গে আপনি আছেন।
রোববার (২৮ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দুস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে ১০ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি করে ডাল ও লবণ এবং এক লিটার তেল দেওয়া হয়।
ভারতকে উদ্দেশ করে ইউনুসের বক্তব্যকে ‘আপত্তিকর’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এই দেশ স্বাধীন। স্বাধীন সার্বভৌম দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বোঝানো! কী বুঝাতে তিনি ভারতকে বলেছেন? খোলাসা করে ইউনূস সাহেব বলবেন কী? কোটা আন্দোলন, অগ্নিসন্ত্রাসও সাম্প্রতিক সহিংসতার সঙ্গে এই বিবৃতির সংযোগ আছে কি না, তাও ভেবে দেখা দরকার।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকায় যানজট বেড়ে যাওয়া নিয়েও কথা বলেন সড়কমন্ত্রী।
তিনি বলেন, কেন এই যানজট? মেট্রোরেল নেই। যে ধ্বংসলীলা মেট্রোরেলের ১০ নম্বর স্টেশন, কাজীপাড়া স্টেশনে, আজকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজা আগুনে কয়লা হয়ে গেছে। উত্তরা থেকে মানুষ আসা-যাওয়া করতে পারছেন না। সময়ও বাড়ছে, পরিবহনব্যয়ও বাড়ছে।
‘এই কষ্ট বহুকালের। শেখ হাসিনাই জনগণের কষ্ট লাঘবে এসব প্রকল্প নিয়েছেন। আমাদের বাস র্যাপিড ট্রানজিট গাজীপুর থেকে চালু হওয়ার কথা। ৩৪টি এক্সিলেটর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কীভাবে চালু করব? এগুলো তো মানুষের জন্য করেছেন।’
এই পরিস্থিতির জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে তিনি বলেন, জনগণ আজ উপলব্ধি করছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড বন্ধ থাকলে তারা কত কষ্টে থাকেন। এই কষ্টটা আমরা দিইনি। এটা দিয়েছে, বিএনপি-জামায়াত। ক্ষমতার জন্য সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, সহিংসতার পথ বেছে নিচ্ছে।
সরকার পতনের ‘এক দফা’ দাবিতে জাতীয় ঐক্য গড়তে বিএনপি যে আহ্বান জানিয়েছে, তা নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি এখন স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী, উন্নয়নবিরোধী অপশক্তিকে নিয়ে নতুন প্লাটফর্ম করার কথা জানান দিচ্ছে। তাদের আহ্বানে তাদের দোসররা সাড়া দেবে, এটাই স্বাভাবিক। মাথা যেদিকে যাবে লেজ ও সেদিকে অনুসরণ... এতে নতুনত্ব কিছু নাই। তবে তাদের ঐক্য আগুসসন্ত্রাসের ঐক্য, দেশ ও দেশের উন্নয়ন ধ্বংসের ঐক্য।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক ও কামরুল ইসলাম।