শনিবার গোলান মালভূমিতে হামলার পর ইসরায়েল লেবাননের হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে। বিশ্বনেতারা ইতিমধ্যে উভয়পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ইসরায়েলের মন্ত্রিরা সরাসরি হিজবুল্লাহর ওপর আক্রমণের জন্য কথাবার্তা বলছেন। যুদ্ধ শুরু হলে হিজবুল্লাহ কতটুকু প্রতিহত করতে পারবে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত ইসরায়েলকে? হিজবুল্লাহ সামরিকভাবে কতটুকুই সক্ষম?
ইউএস সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক অনুসারে, হিজবুল্লাহর কাছে ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিভিন্ন ধরণের ও রেঞ্জের রকেট রয়েছে। হিজবুল্লাহর দাবি, তাদের যেসব রকেট রয়েছে তা ইসরায়েলের সবএলাকায় আঘাত করতে পারে। এগুলোর মধ্যে নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক, অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট এবং অ্যান্টি-শিপ মিসাইল রয়েছে।
হিজবুল্লাহর প্রধান সমর্থক এবং অস্ত্র সরবরাহকারী হচ্ছে ইরান। বিশ্লেষকরা বলছেন, তেহরান স্থলপথে ইরাক ও সিরিয়া হয়ে এই গ্রুপটিকে অস্ত্র পাঠায়। হিজবুল্লাহর অনেক অস্ত্রই ইরানি, রাশিয়ান বা চীনা মডেলের।
২০২১ সালে হিজবুল্লহার প্রধান জানিয়েছিলেন, তাদের এক লাখ যোদ্ধা রয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক বলছে ২০২২ সালে অনুমান করা হয়েছিল, হিজবুল্লাহর ৪৫ হাজার যোদ্ধা রয়েছে।
অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল
হিজবুল্লাহ ২০০৬ সালের যুদ্ধে ব্যাপকভাবে গাইডেড অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল ব্যবহার করেছিল। তারা গাইডেড রকেট মোতায়েনও করেছে। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার তৈরি কর্নেট। ইরানপন্থি সংবাদমাধ্যম আল-মায়াদিনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহ ‘আল-মাস’ নামে পরিচিত ইরানের তৈরি গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রও ব্যবহার করেছে। এপ্রিলে প্রকাশিত ইসরায়েলের আলমা রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টারের একটি প্রতিবেদনে আল-মাসকে একটি অ্যান্টি ট্যাঙ্ক অস্ত্র হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
অ্যান্টি এয়ারক্র্যাফ্ট মিসাইল
হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের সঙ্গে ৬ জুন সংঘর্ষের সময় সারফেস টু এয়ার মিসাইল ব্যবহার করে ইসরায়েলি ড্রোন ভূপাতিত করেছিল। তাদের কাছে বিমান বিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে বলেও ধারণা করা হয়।
ড্রোন
হিজবুল্লাহ বারবার বিস্ফোরক একমুখী ড্রোন ব্যবহার করেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। হিজবুল্লাহর ড্রোনগুলোর মধ্যে রয়েছে স্থানীয়ভাবে তৈরি করা আইয়ুব এবং মারসাদ মডেল, যা বিশ্লেষকরা সস্তা এবং উত্পাদন করা তুলনামূলকভাবে সহজ বলে মন্তব্য করেছেন।
ল্যান্ড অ্যাটাক রকেট এবং মিসাইল
২০২২ সালে হিজবুল্লাহ প্রধান নাসরুল্লাহ জানিয়েছিলেন, তাদের গাইডেন্স সিস্টেমসহ নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে। হিজবুল্লাহর কাছে রাদ (আরবি থান্ডার), ফজর (ডন) ও জিলজাল (ভূমিকম্প) এর মতো ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। তাদের কাছে ইরানের তৈরি ফালাক-২ ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।
অ্যান্টি শিপ মিসাইল
হিজবুল্লাহর কাছে জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর থেকে, হিজবুল্লাহ রাশিয়ার তৈরি ইয়াখন্ট অ্যান্টি শিপ মিসাইল তাদের অস্ত্রাগারে জমা করেছে।