গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ২৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে নোয়াখালী জেলা শহরে। ফলে পানিতে ডুবে গেছে শহরের রাস্তাঘাট। পাশাপাশি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অফিস ও বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে। যে কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা বলেছেন, পৌরসভার উদাসীনতার কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সমস্যা সমাধানে নেওয়া হয়নি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। নোয়াখালী পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, শহরে ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন পুকুর ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ এবং খাল ও নালা দখল হয়ে যাওয়ার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত নোয়াখালী জেলা শহরে ২৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, নোয়খালী শহর বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বিভিন্ন সরকারি অফিসে প্রবেশের পথ পানিতে ডুবে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা আবহাওয়া অফিস, জেলা মৎস্য অফিস, এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, জেলা শিক্ষা ভবন, জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয়, জেলা রেকর্ড রুম, জেলা হাকিম কোয়ার্টার, জেলা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের মাঠ, নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি অফিস। পানিতে ডুবে থাকতে দেখা গেছে, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা সিভিল সার্জনের বাসভবনের সড়কও। জীবিকার তাগিদে নিম্নআয়ের যেসব মানুষ বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তাদের সড়কে অনেক কষ্টে চলাচল করতে দেখা যায়। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. হারুন বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে সুদূরপ্রসারী কোনো পরিকল্পনাই নেই প্রশাসনের। প্রতিবর্ষা মৌসুমেই পানি জমে থাকে। তারপরও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না।
অপর বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টিতে মাইজদী শহর পানির নিচে। বাসা-বাড়িতেও পানি উঠেছে। বাড়ির আঙিনা ডুবে আছে হাঁটু পানিতে।
নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেল জলাবদ্ধতার কারণে নাগরিকদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি নিজেই আজ সকালে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে গিয়েছি। দেখলাম ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রায় সব পুকুর ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। পৌরসভার ভেতরে যে সব খাল-নালা রয়েছে সেগুলো দখল করে রাখা হয়েছে। আজ (২ আগস্ট) বিকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে করণীয় ঠিক করা হবে।’
জেলা আবহাওয়া অফিস দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানা যায়, নোয়াখালী জেলা শহরে ২৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এটি গত ২০ বছরের মধ্যে নোয়াখালীতে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী নোয়াখালীতে আরও কয়েক দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।