সারা বাংলা

ফরিদপুরে সংসদ সদস্যকে বয়কটের ঘোষণা

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চলমান পরিস্থিতির জন্য ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের আজাদ ওরফে একে আজাদকে দায়ী করে তাকে বয়কট ও প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। 

আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর শহরের জনতা ব্যাংক মোড়ে এক সমাবেশে ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর চৌধুরীসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতা একে আজাদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনে বক্তব্য দেন। 

এ দিন একই সময়ে জনতা ব্যাংক মোড়ে সারাদেশে গণহত্যা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে দোয়া প্রার্থনা ও গণমিছিলের ঘোষণা দিয়েছিল ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই অবস্থান নেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ এক পর্যায়ে আশেপাশে থাকা সাধারণ মানুষকে সরিয়ে দেয়। পরে সেখানে নিহতদের জন্য দোয়া ও সমাবেশ করেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। 

সমাবেশে যোগ দিয়ে ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর চৌধুরী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনারা যার পেছনে আছেন, তার পত্রিকা সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার করছে। যে সংসদ সদস্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগে সে আওয়ামী লীগের লোক হতে পারে না, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লোক হতে পারে না। আপনাদের আহ্বান করব, এই লোকের পেছনে থাকবেন না।’ 

বক্তব্যে একে আজাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের মধ্যে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ। তিনি বলেন, ‘ফরিদপুরের সংসদ সদস্য তার মিডিয়া দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনকে উস্কে দিচ্ছে, যত রকমের অরাজকতা হচ্ছে তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে।’ 

বক্তব্যে একে আজাদকে বয়কট করে প্রতিহতের ঘোষণা দেন শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক। তিনিও একে আজাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় বিএনপি জামায়াতের লোক নিয়ে আপনি বড় বড় কথা বলেছেন। একটা ওয়াদাও পূরণ করেন নাই। আপনি মিথ্যাবাদী।’

সমাবেশ শেষে নিহতদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এ সময় জেলা যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য একে আজাদের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি কেটে দেন। এরপর কয়েক দফায় চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে। একটি গ্রুপ একে আজাদ পন্থী, অপর পক্ষ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক পন্থী। নির্বাচনে শামীম হক আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। এরপর বিভিন্ন সময় তাকে একে আজাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে দেখা গেছে।