সারা বাংলা

বাগেরহাট থেকে পায়ে হেঁটে ভারতের কেদারনাথ মন্দিরে যাত্রা 

শিবের কৃপা লাভের আশায় পায়ে হেঁটে বাংলাদেশের বাগেরহাট থেকে ভারতের কেদারনাথ মন্দিরে যাচ্ছেন স্বদেশ কুন্ডু নামের এক কাপড় ব্যবসায়ী। 

শুক্রবার (২ আগস্ট) সকালে রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা এলাকা থেকে টিশার্ট ও গামছা পরিহিত অবস্থায় তিনি পায়ে হেঁটে রওনা দেন। এসময় আবেগঘন পরিবেশে স্বজন ও প্রতিবেশিদের সাথে কোলাকুলির মধ্য দিয়ে বিদায় নেন ২৯ বছর বয়সী স্বদেশ কুন্ডু। সবকিছু ঠিক থাকলে ৭০ দিন পায়ে হেঁটে ১৯০০ কিলোমিটার দূরের মন্দিরে পৌঁছাবেন  এই মহাদেব ভক্ত। স্বদেশ কুন্ডুকে শুভ কামনা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্বদেশ কুন্ডু গৌরম্ভা এলাকার মোহন কুন্ডুর ছেলে। গৌরম্ভা বাজারে তার কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, স্বদেশ কুন্ডু একজন ধর্মভীরু মানুষ। বিভিন্ন সময় সে দূরদূরান্তের জাগ্রত মন্দিরে যাওয়ার আশা প্রকাশ করতেন। এবার সে হেঁটে কেদারনাথ মন্দিরে যাচ্ছেন। আমরা তার জন্য আশির্বাদ করি, সে যেন সুস্থভাবে ফিরে আসেন।

রামপাল পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য তুষার মজুমদার বলেন, আমাদের জানা মতে বাগেরহাট থেকে এই প্রথম কোন ভক্ত হেঁটে কেদারনাথ মন্দিরে যাচ্ছেন। আমরা তাকে বিদায় জানাতে এসেছি। তার যাত্রা সফল হোক।

স্বদেশ কুন্ডুর ভাগ্নে সবুজ সরকার বলেন, হেঁটে যাওয়া খুবই কষ্টকর একটা বিষয়। তারপরও মহাদেবের ভালবাসা পেতে মামা যাচ্ছেন, মামার জন্য শুভ কামনা জানাই।

দীলিপ কুন্ডু নামের এক ব্যক্তি বলেন, মনে আশা থাকলেও সবার পায়ে হেঁটে যাওয়ার সাহস হয় না। স্বদেশের এই যাত্রা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। স্বদেশ সুস্থভাবে ফিরে আসলে হয়ত আরও অনেকে এভাবে হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাতে কেদারনাথ মন্দিরের স্থায়ী ভক্তদের সাথে আমাদের বাগেরহাটের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি সেতুবন্ধন তৈরি হবে।

কেন এই দীর্ঘ যাত্রা জানতে চাইলে স্বদেশ কুন্ডু বলেন, কেদারনাথ মন্দির একটি জাগ্রত মন্দির। ছোট বেলা থেকেই এই মন্দিরে যাওয়ার একটি সুপ্ত বাসনা ছিল, মনের সেই আশা পূরণের জন্য পায়ে হেঁটে যাচ্ছি। সেখানে শিবের পূজা ও আরাধনা করবো। আমার পরিবার ও এলাকাবাসীর জন্য প্রার্থণা করবো।

হেঁটে যাওয়া রুট সম্পর্কে স্বদেশ কুন্ডু বলেন, গৌরম্ভা থেকে রূপসা, রূপসা থেকে কেশবপুর, কেশবপুর থেকে জামতলা, জামতলা থেকে বেনাপোল বর্ডার পার হয়ে পেট্রোপোল থেকে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে প্রবেশ করবো। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে ঝাড়খন্ড প্রদেশ দিয়ে উত্তর প্রদেশের কেদারনাথ মন্দিরে পৌঁছাবো। সবকিছু ঠিক ও শরীর সুস্থ থাকলে ৭০ দিনের মধ্যে পৌঁছাবো। এই সময়ে বিভিন্ন এলাকায় থাকা মন্দির-মণ্ডপে বিশ্রাম ও খাওয়া দাওয়া সম্পন্ন করবো।

কেদারনাথ মন্দিরে পূজা অর্চনা ও অন্যান্য আরাধনা শেষে যানবাহনে করে বাড়ি ফিরবেন ২৯ বছর বয়সী এই যুবক। দীর্ঘ যাত্রায় মাত্র ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হবে বলে জানান স্বদেশ।

কেদারনাথ মন্দিরটি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের গাড়োয়াল হিমালয় পর্বতশ্রেণিতে অবস্থিত কেদারনাথ শহরের মন্দাকিনী নদীর তীরে স্থাপিত একটি শিব মন্দির। এটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান তীর্থ স্থান। প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থীরা আসেন কেদারনাথ মন্দিরে।