সারা বাংলা

পাঁচ পোশাক কারখানায় আগুন, থানায় হামলা

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় পাঁচটি পোশাক কারখানাসহ আশুলিয়া প্রেসক্লাব ও হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া আশুলিয়া থানাতেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের গাড়িসহ কয়েকটি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার জিরানি এলাকায় সিনহা টেক্সটাইল, টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় হামিম গ্রুপ ও বেঙ্গলসহ পাঁচটি পোশাক কারখানায় অগ্নিসংযোগের খবর নিশ্চিত করেছে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেলা ১২টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল ত্রিমোড়ে জড়ো হতে থাকে আন্দোলনকারীরা। এ সময় সড়কে আগুন জ্বালিয়ে স্লোগান দিতে থাকে তারা। পরে দুপুরে বাইপাইল এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।

একই সময় ঢাকা-১৯ আসনের (সাভার-আশুলিয়া) সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি নবীনগর থেকে শুরু হয়ে বাইপাইল যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সংঘাত চলতে থাকে। এতে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বেলা আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সেখান থেকে সরে গেলে ফের বাইপাইল মোড় দখলে নেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা আবারও সড়কে অগ্নিসংযোগ করে ও বাইপাইলে অবস্থিত পিয়ারলেস হাসপাতাল ভবনে ভাঙচুর করে। এছাড়া বাইপাইলে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। এসব ঘটনার মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ফের ধাওয়া দিলে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে পরে। পরে বিভিন্ন বাসা বাড়িতেও ভাঙচুর চালায়। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, ওই সময় বিভিন্ন বাড়ির সামনে থাকা সিসি ক্যামেরা ভাঙে তারা। বিভিন্ন বাড়ির গেইট ও জানালা ভাঙচুর করতেও দেখা গেছে আন্দোলনকারীদের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে আন্দোলনকারীরা আশুলিয়া থানায় হামলা চালিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট চালিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর আবারও আশুলিয়া থানার সামনে থাকা অন্তত পাঁচটি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। 

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, দুর্বৃত্তরা থানায় হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিলো। আমরা তাদের প্রতিহত করে সরিয়ে দিয়েছি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে আশুলিয়ার জিরানি এলাকায় সিনথিয়া নীট অ্যান্ড ডেনিম কারখানায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় হামিম গ্রুপের কারখানার ঝুট গোডাউন ও সামনে পার্কিং এ থাকা কয়েকটি গাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া ও বেঙ্গলসহ পাঁচটি তৈরি পোশাক কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস এর ঢাকা জোন-৪ এর উপসহকারী পরিচালক মো. আলাউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী বলেন, আশুলিয়ায় হামিম গ্রুপ, সিনহা টেক্সটাইল ও বেঙ্গলসহ পাঁচটি পোশাক কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দুটি কারখানার নাম পাওয়া যায়নি। এছাড়া চক্রবর্তী এলাকায় বেক্সিমকো গ্রুপে হামলার খবর পেয়েছি। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যেতে চাইলে বাধা দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ওপর হামলার চেষ্টা হয়।