বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিষয়াবলী নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ভারতের এই টিভি চ্যানেলকে ফখরুল বলেছেন, যদি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন তাহলে বেগম খালেদা জিয়া আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। এছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে পারলে ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ফখরুল আরও বলেছেন, তার বিশ্বাস সেনাবাহিনী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় কোনো হস্তক্ষেপ করবে না এবং সম্প্রতি শেখ হাসিনার পতনের যে আন্দোলন হয়েছে সেটির সঙ্গে উগ্রবাদী কোনো সংগঠনের সংশ্লিষ্টতাও নেই।
শনিবার (১১ আগস্ট) রাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির সঙ্গে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
দীর্ঘ এ সাক্ষাৎকারে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ফখরুল বলেন, বর্তমানে তিনি খুবই অসুস্থ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি মাল্টিডিসপ্লিনারি রোগে ভুগছেন। দেশে তার ভালো চিকিৎসা হচ্ছিল না। আমরা আদালত এবং সরকারকে বারবার অনুরোধ করেছিলাম উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যেন বিদেশে পাঠানো হয়। কিন্তু সেটি হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এখন বিদেশ যাওয়ার মতো শারীরিক অবস্থা তার নেই। তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। তিনি যদি শারীরিককভাবে ফিট থাকেন তাহলে অবশ্যই নির্বাচনে অংশ নেবেন।
মির্জা ফখরুল জানান, বিএনপি এখন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে সময় লাগবে। কারণ শেখ হাসিনার সরকারের সময় নির্বাচনী কাঠামো কার্যত ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থা দূষিত হয়ে গেছে এবং এটি এখন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের অবস্থানে নেই। এ কারণে তাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি-এ বিষয়ে তার মতামত জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দল এবং সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি নিজে বলেছেন তিনি পদত্যাগ করেছেন। এটি কোনো জবরদস্তি ছিল না, এটি বিপ্লব ছিল। যখন লাখ লাখ মানুষ শেখ হাসিনার বাড়ির দিকে আসছিল; তার নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনী বলেছে তার সামনে দুটি অপশন রয়েছে-এখানে থাকুন মানুষের রোষে পড়ুন, আর নয় দেশ ছাড়ুন। তিনি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার অভিযোগের ব্যাপারে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি পুরোটি সত্য নয়। যখন আমাদের দেশে বা অন্য দেশে পরিবর্তন হয়-বিশেষ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশে কিছু মানুষ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে। বাংলাদেশে দুর্ভাগ্যবশত দায়িত্বে থাকা দলের নেতারা ভিকটিমের শিকার হন, তারা মুসলিম হোক আর হিন্দু হোক। সংখ্যালঘুদের ওপর বিক্ষিপ্ত কিছু হামলা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো রাজনৈতিক অথবা পদ্ধতিগত এজেন্ডা ছিল না। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক পরিবেশ অসাধারণ।
প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করার ব্যাপারে বিএনপির এই নেতা বলেন, তিনি শেখ হাসিনার স্বৈরাচার সরকারের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। এ কারণে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি