ক্যাম্পাস

অবশেষে পদত্যাগ করলেন কুবি উপাচার্য আবদুল মঈন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন অবশেষে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন। রোববার (১১ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি বরাবর দেওয়া পদত্যাগপত্র থেকে বিষয়টি জানা যায়।

এর আগে, কুবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি আদায় না হওয়ায় উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি করে আন্দোলন চলমান ছিল। সর্বশেষ শনিবার (১০ আগস্ট) রাত পৌনে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কসহ শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্যসহ প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবি করেন।

পদত্যাগপত্রে অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, আমি ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে যোগদান করি। যোগদানের পর আমি আমার অভিজ্ঞতা, সততা, নৈতিকতা, দক্ষতা ও আইন মেনে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি লিডিং ও মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা যায় সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করি। এজন্য প্রথমেই আমি উদ্ভাবনে নেতৃত্ব, সমাজের ক্ষমতায়ন, উন্নয়ন, মানবকল্যাণ, সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধকরণ এবং টেকসই প্ল্যানেট গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ভিশন তৈরি করি। এই ভিশন অর্জনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করি এবং শিক্ষা, শিক্ষণ ও গবেষণার সংস্কৃতি ও পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে রূপান্তর করার জন্য নতুন নতুন স্কিম গ্রহণ করি। 

এর মধ্যে, ভর্তি পরীক্ষার আয় থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি চালু, উন্নতমানের প্রকাশনার জন্য শিক্ষকদের অ্যাওয়ার্ড চালু, সেশনজট হ্রাসকল্পে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রবর্তন, উচ্চতর ডিগ্রি শেষে বিদেশে থেকে পদ ধরে রাখার কারণে যে শিক্ষক সংকট তৈরি হয়েছে তাদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওনা বাবদ টাকা ফেরত এনে পদ শূণ্য করা অন্যতম। 

তিনি পদত্যাগপত্রে আরও লিখেন, এসব স্কিমের কারণে গত দুই বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক সফলতা ও সম্মান অর্জন করেছে। যেমন- গুচ্ছ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এক নম্বর অবস্থানে রয়েছে, বৈশ্বিক এডি ইনডেক্স-এর গবেষকদের তালিকায় এই দুই বছরে প্রায় ১৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৯০ জনে উন্নীত হয়েছে, এপিএ'তে কুবির অবস্থান ৪২তম থেকে ১০ম স্থানে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। তাছাড়া, স্পেন-বেইজড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবমেট্রিক্স গ্লোবাল র‍্যাংকিং অনুযায়ী দুই বছরে আমরা কয়েকশ ধাপ অতিক্রম করেছি। অতি সম্প্রতি প্রকাশিত আন্তর্জাতিক সিমাগো র‍্যাংকিং অনুযায়ী বাংলাদেশের ৮ নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কুবি স্থান করে নিয়েছে।

অধ্যাপক আবদুল মঈন বলেন, বর্তমানে আমি আমার ব্যক্তিগত কারণে উপাচার্যের পদ থেকে এ পত্রের মাধ্যমে আজ দুপুরে পদত্যাগ করতে আপনার (রাষ্ট্রপতি) নিকট পদত্যাগপত্র পেশ করলাম। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত থাকুক এই কামনা করছি।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম উপাচার্য। তিনি ইমরান কবির চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।