ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) বিএনসিসি প্লাটুন কুষ্টিয়া শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পঞ্চম দিনের মতো দায়িত্ব পালন করছে এবং সেনাপ্রধানের কার্যক্রম বন্ধের আদেশ না আসা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ক্লিন ক্যাম্পাস কর্মসূচি পালন করেছেন ইবি সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১২ আগস্ট) ইবি শিক্ষার্থীরা দিনব্যাপী এসব কর্মসূচি পালন করেন।
জানা গেছে, সকাল ৯টায় ইবি সেনা প্লাটুনের সিইউও আলী আহসান মুহাম্মদ জুবাইর এর আদেশে সার্জেন্ট সুলতান মাহমুদের তত্ত্বাবধানে ইবি বিএনসিসি প্লাটুন সেনা শাখা, নৌ শাখা, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজ, কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ক্যাডেটগণ দায়িত্ব পালন করেন। তারা নেতৃত্ব কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস, মজুমপুর, বক চত্বর, সিঙ্গার মোড়, বড় বাজার, কলেজ মোড়, হাসপাতাল মোড়সহ নানা স্থানে দায়িত্ব পালন করছে ক্যাডেটবৃন্দ। কুষ্টিয়ার এ স্থানসমূহ সবসময় যানজটপূর্ণ থাকে। তবে তাদের কার্যক্রমে এসব স্থান অনেকটাই যানজট মুক্ত থাকতে দেখা যায়।
এ সময় এক পথচারী বলেন, দেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সেনাবাহিনী ব্যতীত কেউ তেমন মাঠে নেই। কিন্তু দ্বিতীয় সারির সামরিক বাহিনী হিসেবে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রশংসার যোগ্য। যেহেতু তারা শিক্ষার্থী এবং ট্রাফিক নীতিমালা ও কাজ সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা না থাকলেও তারা যথেষ্ট পরিশ্রম ও নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে বলে আমি মনে করি।
ইবি সেনা প্লাটুনের সিইউও আলী আহসান মুহাম্মদ জুবাইর বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনসিসি ক্যাডেটরা কাজ করতে সবর্দা বদ্ধপরিকর। সে অবস্থান থেকে দেশের এই ক্রান্তিকালে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুপস্থিতিতে বিএনসিসি ক্যাডেটরা দীর্ঘদিন পর দেশের এ রকম একটা সেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছে। জনসাধারণের ভোগান্তি কমাতে বিএনসিসি মহাপরিচালকের আদেশে আমরা আমাদের স্থান থেকে সবোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। জনসাধারণের কাছে বিশেষ অনুরোধ, তারা যেন দেশের আইন শৃঙ্খলার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান রেখে চলাচল করেন।
এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে ক্যাম্পাসের শহিদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, ডায়না চত্বর, ঝাল চত্বর, বটতলা, প্রশাসন ভবন, আবাসিক হল ও অ্যাকাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করেন।
তাদের সড়কে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে নিয়ে ঝাড়ু ও বেলচা দিয়ে রাস্তার পাশের ময়লা, ফুটপাতে পড়ে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করে বস্তায় ভরে নির্ধারিত স্থানে ফেলে দিয়ে আসতে দেখা যায়৷
শিক্ষার্থীরা জানান, গত কয়েক দিনের আন্দোলনে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইট-পাটকেল, লাঠিসোটা, পোড়া ময়লার স্তূপ পরিষ্কারসহ শহরের নানা আবর্জনা পরিষ্কার করছেন। তাদের এ কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচি চলাকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, পুরো বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ দেশ বিনির্মাণে নিজ নিজ জায়গা থেকে অংশগ্রহণ করছে, ইবি শিক্ষার্থীরাও তার বাইরে না। আমাদের আন্দোলনের সহযোদ্ধা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে পুরো ক্যাম্পাসে এ কর্মসূচি চলবে। এছাড়াও জিমনেশিয়ামের দায়িত্বশীলদের বলবো, আমাদের দুটো খেলার মাঠ দ্রুত পরিষ্কার করে দিতে, যাতে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান।