তথ্য প্রদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমানকে শাস্তি প্রদান করেছে তথ্য কমিশন। উভয় পক্ষের শুনানী শেষে মমিনুর রহমানকে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ এর ২৭ এর (১) (ঙ) ধারা অনুযায়ী তিন হাজার টাকা জরিমানা ও সর্তক করেছে তথ্য কমিশন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিকেলের দিকে তথ্য কমিশনের উপ-পরিচালক সোহানা নাসরিন এক সিদ্ধান্তপত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তথ্য কমিশনের সিদ্ধান্তপত্র থেকে জানা যায়, তথ্য অধিকার আইন যথাযথভাবে অনুসরণ করে রাইজিংবিডির মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি দৌলতপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমান বরাবর তথ্য চেয়ে আবেদন করেন। তথ্য না পাওয়ায় আবেদনকারী যথাযথভাবে নিয়ম অনুযায়ী আপিল ও অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের পর উভয় পক্ষের শুনানী শেষে তথ্য কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।
এ সময় তথ্য প্রদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমানকে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তথ্য প্রদানের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া মো. মমিনুর রহমানকে তিন হাজার টাকা জরিমানা ও সতর্ক করা হয়। সেই সাথে মমিনুর রহমান তথ্য কমিশনের শুনানীতে হাজিরার জন্যে কোনো টিএ/ডিএ প্রাপ্য হবেন না বলে জানায় কমিশন। আর এ সিদ্ধান্ত পত্রের অনুলিপি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মানিকগঞ্জের জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা বরাবর পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের শেষ দিকে দৌলতপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধান শুরু করে রাইজিংবিডির মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জাহিদুল হক চন্দন। অনুসন্ধানের প্রয়োজনে ওই সময় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের তথ্যের প্রয়োজন হয়। তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার পরও মমিনুর রহমান তথ্য সরবরাহ করেননি।
পরে জেলা ও ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যালয়ে পৃথক আবেদন করে তথ্য জোগাড় করেন এ প্রতিবেদক। দীর্ঘ চার মাসের অনুসন্ধান শেষে চলতি বছরের ২৫ মে ‘‘তৃণমূলের উন্নয়ন প্রকল্প ‘সাত ভূতে’ লুটপাট” ও ২৬ মে ‘ওদের পকেট ভরে, সবার ভোগান্তি বাড়ে’ শিরোনামে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন দুটি প্রকাশের পর ২ জুন মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অপরদিকে তথ্য প্রদান না করায় শাস্তি দিলো তথ্য কমিশন।