সারা বাংলা

কুড়িগ্রামে স্পার বাঁধে ধস, ভাঙনের শঙ্কা

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরায় প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিস্তা নদীর বাম তীর রক্ষার একটি স্পার বাঁধে (গ্রোয়েন) ধস দেখা দিয়েছে। ফলে বাড়ি, আবাদি জমি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বাঁধের ধস ঠেকাতে নদীতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তিস্তার পানির স্রোতে আই আকৃতির বাঁধের মাথায় প্রায় ৫০ মিটার দেবে গেছে। দ্রুত মেরামত করা না হলে ধীরে ধীরে পুরো বাঁধটি ধসে যাবে। আগামীতে বন্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এই এলাকা নদী ভাঙনের কবলে পড়বে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চর বজরা এলাকায় ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে প্রায় ৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে তিস্তা নদীর বাম তীর রক্ষায় ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যর বন্যা নিয়ন্ত্রণে একটি স্পার বাঁধ (গ্রোয়েন) নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে বাঁধটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের জুন মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হলে তা ধীরে ধীরে ভ্রমণ পিপাসু মানুষের বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়। আই আকৃতির বাঁধটিতে প্রতিনিয়ত শত শত বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ভিড় জমাতে থাকেন একটু অবসর সময় কাটানোর জন্য। 

 স্থানীয়রা জানান, গোধূলি লগ্নে নদীর তীরে প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য দেখতে পরিবার পরিজন নিয়ে সবাই বাঁধটিতে ঘুরতে আসেন। বাঁধটি ভেঙে গেলে এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের এই স্থানটি হারিয়ে যাবে। পাশাপাশি কয়েকটি গ্রামের মানুষের ফসলি জমি, বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তিস্তার পেটে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বজরার স্থানীয় বাসিন্দা আইয়ুব আলী বলেন, ‘আই আকৃতির বাঁধটি নির্মাণ করায় তিস্তা নদীর বাম তীরের বজরা এলাকার অনেক পরিবার ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে। বাঁধটিতে ধস দেখা দেওয়ায় এখন সবাই ভয়ে আছেন। বাঁধটি যদি পুরোপুরি ধসে যায় তাহলে এলাকাবাসী নদী ভাঙন ও বন্যায় নিঃস্ব হয়ে যাবেন।’

একই এলাকার আমজাদ হোসেন জানান, ‘বাঁধটি নির্মাণে এলাকাবাসী অনেক উপকৃত হয়েছেন। বাঁধটি রক্ষা করা না হলে এলাকার চর বজরা উচ্চ বিদ্যালয়, চর বজরা জামে মসজিদ, বজরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ কাশিম বাজার, চর বজরা, পূর্ব বজরা, লকিয়ারপাড় ও পশ্চিম বজরা এলাকা নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়বে। ফলে বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি, বসতভিটা ও স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।’

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘বাঁধটি ধসে যাওয়ার খবর পেয়ে স্থানটি পরিদর্শন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করা হবে।’