সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়িয়েছে বন্যার্তদের জন্য পাগলা মসজিদ থেকে টাকা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে গুজব বলে জানিয়েছেন।
তারা জানিয়েছে, কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ফান্ড থেকে বন্যা কবলিতদের মাঝে অনুদান দেওয়ার যে খবর ছড়িয়ে পড়েছে সেটা সঠিক নয়। পাগলা মসজিদ কমিটি থেকে এখনো তেমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘লোক মুখে বিষয়টি আমি শুনেছি। তাছাড়া গণমাধ্যমের অনেকেই এ ব্যাপারে আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন। কিন্তু বিষয়টি সঠিক নয়। পাগলা মসজিদের দানের টাকা থেকে বন্যার্তদের মাঝে অর্থ বিতরণের ব্যাপারে কেও আমাদের সাথে কোনো আলোচনা করেননি। তাছাড়া পাগলা মসজিদ পরিচালনায় ৩০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি রয়েছে। সবশেষ মসজিদের দানবাক্স থেকে পাওয়া টাকা নিয়ে এখনো কোনো মিটিং হয়নি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সে সুযোগও নেই। তাছাড়া ওকাফ স্টেটের অধীনে মসজিদ পরিচালিত হচ্ছে। ইচ্ছে করলেই মসজিদে যে টাকা সেটি কোথাও অনুদান দিতে পারবে না কমিটি।’
দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এখন ভয়াবহ বন্যার সম্মুখিন হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। আর এমন দুযোর্গকে কেন্দ্র করে সারা দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে বন্যার্তদের জন্য। এমন অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দাবি ওঠে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ফান্ড থেকে কিছু টাকা বন্যায় কবলিত এলাকায় ত্রাণ দেওয়ার।
আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা সোয়াইব বিন আব্দুর রউফ জানান, যিনি দান করেছেন তিনি মসজিদকে কেন্দ্র করে দান করেছেন। মসজিদে দানকৃত টাকা মসজিদের উন্নয়ন ব্যতীত অন্য কোথাও অনুদান দেওয়া যাবে না। এটা শরিয়ত অনুমোদন দেয় না। দাতা যেখানে দান করেছে সেটা রক্ষা করাই হবে মূল কাজ। তবে বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য মসজিদকেন্দ্রিক ক্যাম্পেইন করা যেতে পারে। সে অর্থ বন্যার্তদের মাঝে পাঠানো যাবে। কিন্তু মসজিদের ফান্ড থেকে দান করা যাবে না।
পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, পাগলা মসজিদের ফান্ড থেকে বন্যায় কবলিতের মাঝে অনুদান দেওয়ার বিষয়টি এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা ছড়িয়েছে তা গুজব। আর এসব ব্যাপারে সত্যতা যাচাই না করে গুজবে কান না দেয়ার জন্য তিনি সকলের কাছে অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য, সবশেষ গত ১৭ আগস্ট তিন মাস ২৬ দিন পর পাগলা মসজিদের নয়টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। দিনভর গণনা শেষে তার পরিমাণ দাঁড়ায় সাত কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা। এছাড়া দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও ছিল।
এর আগে চলতি বছরের ২০ এপ্রিল পাগলা মসজিদের নয়টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন রেকর্ড সাত কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া যায়।