মৌলভীবাজারে এবারের বন্যায় মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলার ১ হাজার ৬৫০টি পুকুর ও দিঘীর ২১০ মেট্রিক টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে শনিবার (২৪ আগস্ট) জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহনেওয়াজ সিরাজী।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, আশঙ্কা করা হচ্ছে, বন্যায় ৪৯ হাজার ৪৮২ হেক্টর জমির ধান ও ফসল নষ্ট হয়েছে। প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ বন্যার পানি নেমে গেলে জানা যাবে।
এদিকে, মৌলভীবাজারে কমতে শুরু করেছে সব নদ-নদীর পানি। এরই মধ্যে আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে মনু নদীর পানি কমে রেলওয়ে পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে। ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ রয়েছে।
মৌলভঅবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, মৌলভীবাজারের ৭টি উপজেলার ৫২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় ২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকে ৬২টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। ১০২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ৮ হাজার ৫৮১ জন মানুষ। প্রশাসনের পক্ষে ৫১৬ টন ত্রাণের চাল ও নগদ ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা রহিমা বেগম জানান, প্রশাসন গবাদিপশু ও শিশু খাদ্যের ব্যবস্থা না করায় সেগুলো নিয়ে বিপাকে আছি।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মনু নদীর পানি কমে রেলওয়ে পয়েন্টে ১৪৭ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই নদীর পানি চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে ও জুড়ি নদীর পানি কমে বিপৎসীমার ১৮০ সেন্টিমিটার ওপর রয়েছে। ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন জায়গায় নদীর বাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্বেচ্ছাসেবীরা নিজ উদ্যোগে কাজ করছেন।