জাতীয়

বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে, রোগ-বালাই নিয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ

দেশের ১১ জেলায় ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯ পরিবার পানিবন্দি উল্লেখ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব কামরুল হাসান বলেছেন, সার্বিকভাবে ১১ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে পানি নেমে যাওয়ার পর বন্যা আক্রান্ত এলাকায় অনেক রোগের প্রাদুর্ভাব হতে পারে। এ ব্যাপারে আমরা সতর্ক করেছি, প্রত্যেককে নিরাপদ পানি ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করেছি।

বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রোববার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে জানিয়ে সচিব বলেন, দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১১ জেলায় মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ২০ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার, ৩৫ লাখ টাকার শিশুখাদ্য এবং ৩৫ লাখ টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

কামরুল হাসান বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা এবং সচিব মহোদয় বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বন্যা উপদ্রুত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগাযোগের জন্য একটি ভি-সেট চালু করা হয়েছে। তাছাড়া ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম উপজেলায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ ও সড়ক পথে এবং তাদের হেলিকপ্টারসহ বিমানবাহিনী, র‍্যাব ও বিজিবির হেলিকপ্টার যোগে প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে। পাশাপাশি উদ্ধার কার্যক্রম চলমান আছে।

‘আমাদের কন্ট্রোল রুম খোলা আছে। প্রধান উপদেষ্টার একটি হিসাব খোলা আছে সেখানে যদি কেউ কিছু দিতে চান সেটি অব্যাহত আছে। বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, মেডিক্যাল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে’ বলেও জানান তিনি।

বন্যা আক্রান্ত লোকজনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ফেনীতে একটি ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছেন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা নির্দেশনা দিচ্ছেন।

বন্যায় ১৮ জনের মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধকোটি মানুষ

বন্যায় এখনো দেশের ১১টি জেলায় ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। এসব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৯৮। এখন পর্যন্ত বন্যায় ১৮ জনের মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। নিখোঁজ আছেন দুজন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ–সংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনে রোববার এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বেলা তিনটায় এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।