জাতীয়

সহিংসতা-মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার প্রত্যাশা যুক্তরাজ্যের

গত দুই মাসে বাংলা‌দে‌শে সংঘটিত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার চে‌য়ে‌ছে যুক্তরাজ‌্য সরকার। তারা এই সরকার‌কে সব ধর‌নের সহ‌যো‌গিতা দেওয়ার কথাও ব‌লে‌ছে।

বৃধবার (২৮ আগস্ট) স‌চিবাল‌য়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর স‌ঙ্গে তার কার্যাল‌য়ে সৌজন‌্য সাক্ষাৎকা‌লে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এসব কথা ব‌লেন।

সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গত দুই মাসে (৫ জুন থেকে ৫ আগস্ট) সংঘটিত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার প্রত্যাশা করে।

তিনি বলেন, যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত আইন ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ বিষয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের বাংলাদেশ সফরের কথা হাইকমিশনারকে অবহিত করেন।

স্বরাষ্ট্র উপ‌দেষ্টা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। যারা আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন‌্য সাক্ষা‌ৎ কর‌তে সচিবালয়ে তার দপ্তরে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।

এ সময় তার স‌ঙ্গে যুক্তরাজ্য দূতাবাসের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) দাওয়ানি ও ইমিগ্রেশন লিয়াজো এবং মাইগ্রেশান ম্যানেজার লিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সন্ত্রাস দমনে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা, অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা, পুলিশ সংস্কারে সহায়তা, বন্যা পুনর্বাসন ও রোহিঙ্গাদের সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা দিতে ইচ্ছুক।

তিনি বলেন, সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাজ্য বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে একসাথে কাজ করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আমরা সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই।

উপদেষ্টা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেন। সারাহ কুক যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন।

তিনি জানান, এ বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর অনুসরণ করা হবে। উপদেষ্টা এ সময় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা কামনা করেন।

হাইকমিশনার জানান, রোহিঙ্গাদের সহায়তার ক্ষেত্রে অর্থায়নে যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। বিগত ৭ বছরে দেশটি রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করেছে।

তিনি আরও জানান, রোহিঙ্গা ইস্যু যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে থাকে, সেজন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য কাজ করে যাচ্ছে।

উপদেষ্টা এ সময় বন্যার্তদের সহযোগিতায় যুক্তরাজ্যের সহায়তা কামনা করেন।

উপদেষ্টা জানান, আমরা একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুলিশ সংস্কারে উদ্যোগ নিয়েছি, তবে তা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক সহায়তা দিয়ে যুক্তরাজ্য সহায়তা করতে পারে।

জবাবে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, সেপ্টেম্বরে এ সংক্রান্ত যুক্তরাজ্যের একটি এক্সপার্ট টিম বাংলাদেশ সফর করবে। তারা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে পারে।