জাতীয়

উপদেষ্টাদের দেশ-বিদেশ সফরে নতুন নি‌র্দেশনা

মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের দেশ-বি‌দেশ সফরকা‌লে ২০১৮ সালের নির্দেশনা বাতিল ক‌রে নতুন সরকারের উপদেষ্টাদের রাষ্ট্রীয় বা সরকারি কাজে বিদেশে যেতে ও দেশে ফিরলে বিমানবন্দরে এবং দেশের মধ্যে সফরকালে অনুসরণীয় রাষ্ট্রাচার (প্রটোকল) সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এটি জারি করা হয়।

একইস‌ঙ্গে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের সরকারি কাজে বিদেশে গমন ও দেশে প্রত্যাগমনের সময় বিমানবন্দরে এবং দেশের অভ্যন্তরে সফরকালে অনুসরণীয় রাষ্ট্রাচার সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২০১৮ সালের নির্দেশনা বাতিল করা হয়েছে বলেও নতুন নির্দেশনায় জানানো হয়ে‌ছে।

নতুন নি‌র্দেশনায় বলা হয়, উপদেষ্টাদের বিদেশে যাওয়া ও আসার সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্ম সচিব বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন।

দেশের ভেতরে সফরকালে উপদেষ্টাদের অভিপ্রায় অনুযায়ী তার ঢাকা ত্যাগ ও ফিরে আসার সময় মন্ত্রণালয় বা বিভাগের উপদেষ্টার একান্ত সচিব উপস্থিত থাকবেন বলেও এতে জানানো হয়।

জেলা সদরে যথাসম্ভব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের স্থানীয় পর্যায়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা উপদেষ্টাকে আগমন ও বিদায়ের স্থানে অভ্যর্থনা ও বিদায় সংবর্ধনা জানাবেন।

জেলা সদরে উপস্থিত থাকার জন্য জেলা প্রশাসক বা পুলিশ সুপারের নিজের সরকারি সফর বাতিল বা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হবে না। এ ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা ও বিদায় সংবর্ধনা জানাবেন। তবে, জেলা প্রশাসক আগেই নিজের সফরসূচি জারি করে থাকলে উপদেষ্টার সফরসূচি পাওয়ার পরই উপদেষ্টার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হবেন যে, জেলা প্রশাসকের সদরে থাকা আবশ্যক কি না। উপদেষ্টা এমন ইচ্ছা প্রকাশ করলে সেক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক তার সফরসূচি বাতিল করবেন।

উপজেলা সদর বা উপজেলার অন্য কোনো স্থানে উপদেষ্টার সফরকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী পুলিশ সুপার এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের স্থানীয় পর্যায়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা ও বিদায় সংবর্ধনা জানাবেন। আবশ্যক না হলে জেলা প্রশাসক কিংবা পুলিশ সুপারের এক্ষেত্রে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই বলেন নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।

উপদেষ্টার আগমন ও প্রস্থানের সময় আবশ্যক না হলে বিমানবন্দর বা রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকা/চট্টগ্রাম/কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার/মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।

জেলা/উপজেলায় উপদেষ্টার আগমন/প্রস্থানের সময় আশপাশের জেলার বিমানবন্দর/রেলস্টেশন ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহৃত হলে ট্রানজিট স্থানে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের উপস্থিতির প্রয়োজন নেই; এক্ষেত্রে ট্রানজিট স্থানে জেলা প্রশাসকের উপযুক্ত প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।

উপদেষ্টাদের আগমন ও প্রস্থানের সময় বিভাগীয় কমিশনার বা সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশের (ডিআইজি) উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই। বিভাগীয় কমিশনার সদর দপ্তরে উপস্থিত থাকলে উপদেষ্টার আগমনের পর তিনি তার সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করতে পারেন।

উপদেষ্টাদের সফরসূচি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

রেলওয়ে পুলিশের জন‌্য নির্দেশনা: উপদেষ্টার সফরসূচি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেলওয়ে পুলিশ সুপার তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট রুটের সব পুলিশ স্টেশন/ফাঁড়িকে অবহিত করবেন।

যে স্টেশনে উপদেষ্টা ট্রেন থেকে অবতরণ এবং ট্রেনে পুনরায় আরোহন করবেন অথবা কোনো জংশনে যে স্থানে ট্রেন বদলের প্রয়োজন হবে সেসব স্থানে পুলিশের একজন পরিদর্শক বা উপ-পরিদর্শক উপস্থিত থাকবেন।

রেলযোগে চট্টগ্রামে গমন ও প্রস্থানের সময় সেখানে চট্টগ্রাম রেলওয়ের পুলিশ সুপার উপস্থিত থাকবেন।

সাধারণ নির্দেশনা:  উপদেষ্টাদের সফরসূচি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে যথা সময়ে প্রেরণ করতে হবে। সফরসূচিতে কোনো পরিবর্তন হলে তাও যথা সময়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করতে হবে।

সার্কিট হাউস বা সরকারি রেস্ট হাউস ছাড়া নিজ বাড়ি কিংবা অন্যত্র অবস্থানের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রাচার সংক্রান্ত বিদ্যমান নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

সফরসূচি প্রণয়নের সময় সফরটি সরকারি, না ব্যক্তিগত তা উপদেষ্টাদের দপ্তর থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করতে হবে। সরকারি সফরের সময় উপদেষ্টাদের জন্য যানবাহন ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। ব্যক্তিগত সফরের জন্য যানবাহন ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হলে এ সংক্রান্ত সেবার মূল্য পরিশোধের প্রচলিত নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

উপদেষ্টার একান্ত সচিব বা সহকারী একান্ত সচিবরা উপদেষ্টার ইচ্ছা অনুযায়ী এ সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করবেন।