সারা বাংলা

বাড়ি বন্যায় প্লাবিত, তাই তাঁবুতে বসবাস

টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে বন্যার কারণে কুমিল্লায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। ৭৭ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে। তবে অনেকে চুরির ভয়ে বাড়ি ছেড়ে যাননি। অনেকে বাড়ির পাশের সড়কে তাঁবু গেঁড়ে সেখানে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে বসতভিটার দিকে নজর রাখছেন। 

বুধবার (২৮ আগস্ট) কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বুরবুড়িয়া, কিং বাজেহোড়া, মিথিলাপুর এলাকার গোমতী নদীর পাড়ে কয়েকটি পরিবারকে সড়কে তাঁবু টানিয়ে বসবাস করতে দেখা যায়। তারা বলছেন, পাশেই তাদের বাড়ি। ঘরে পানি উঠায় কয়েক দিন ধরে রাস্তার পাশে তাঁবুতে থাকছেন।

তাদের একজন ইকবাল হোসেন। বন্যায় ঘর ডুবে যাওয়ায় স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে সড়কে তাঁবু টানিয়ে থাকছেন। তিনি বলেন, ‘বাড়ির মায়া তো ছাড়তে পারি না। দিন আনি দিন খেয়ে বাড়ি বানিয়েছি। এখন সবই পানিতে। এ বাড়ি ছেড়ে দূরে যাই কীভাবে? তাছাড়া, চুরি ডাকাতির ভয় তো আছেই। আমরা ২০-৩০টি পরিবার এ রাস্তার পাশে রয়েছি।’

ইকবালের পাশে আরেকটি তাঁবুতে রয়েছেন কামরুল হোসেন। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। পানি বেড়ে যাওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বাড়ি ছাড়েন। তিনি বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা নেই। এদিকে বাড়ি অরক্ষিত। তাই রাস্তার পাশে থাকছি।’ 

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী বলেন, কুমিল্লায় ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭৭ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। 

তিনি জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৬০০ মেট্রিক টন চাল ও ৩৯ লাখ নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত টাকা বন্যার্তদের সংখ্যা অনুযায়ী উপজেলায় ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

জেলায় বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে বলে জানান তিনি।