বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নজরুল ইসলাম (৩২) নামে এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী মোছা. পূর্নিমা বেগম বুধবার (২৮ আগস্ট) গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম।
নিহত নজরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার বারইভাগ গ্রামের মো. জামাল শেখের ছেলে। তিনি গাজীপুর মহানহগরীর বাসন থানার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার শাহাবুদ্দিন মন্ডলের বাসায় ভাড়া থাকতেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, মেহের আফরোজ চুমকি, সিমিন হোসেন রিমি, রুমানা আলী টুসি, আখতার উজ্জামান, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউল্যাহ মন্ডল, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মতি, আসাদুর রহমান কিরণ, আফজাল হোসেন সরকার রিপন, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল। মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সিটি করপোরেশনের কয়েকজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার স্বামী নজরুল ইসলাম ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিতে গত ২০ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে ঘর থেকে বের হন। তিনি ঢাকা-ময়মনসিংহগামী মহাসড়কের পূর্ব পাশে চান্দনা এলাকায় পশমী সোয়েটার গার্মেন্টসের পাকা রাস্তার ওপর সমাবেশে অংশ নেন। সেখানে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলাকালে মামলার প্রথম ১৬জন আসামির নির্দেশে অন্য আসামিরা বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, ছেন, চাপাতিসহ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে। তারা হত্যার উদ্দেশ্যে কিল-ঘুষি মেরে, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে আঘাত করে একাধিক আন্দোলনকারীকে জখম করে। এক পর্যায়ে তারা হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালায়। সেসময় তাদের ছুঁড়া গুলি নজরুল ইসলামের পিঠের ডান পাশে বিদ্ধ হয়। ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনে গাজীপুর মেট্রোপলিটন টঙ্গী পূর্ব, গাছা, বাসন, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের আসামি করা হয়েছে।