ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসহাক আলী খান পান্নার (৬০) ভারতে পালানোর সময় মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছিলো। তার লাশ দেশটির মেঘালয় রাজ্যের উমকিয়ং থানা-পুলিশের হেফাজতে আছে বলে স্বজনেরা জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে তার বড় ভাই জাফর আলী খান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন।
ইসহাক আলী খান পান্নার বড় ভাই জাফর আলী খান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লাশ দেশে আনার জন্য আবেদন করেছি। আবেদনে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ উপহাইকমিশনারের কার্যালয়ে লাশ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শনিবার (২৪ আগস্ট) ভোররাতে সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং যাওয়ার পর পাহাড় থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তার লাশ বর্তমানে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উমকিয়ং থানা পুলিশের কাছে আছে।
ইসহাক আলী খান পান্নার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য জসিম উদ্দিন খান জানান, ঘটনার সময় ইসহাক আলী খান পান্নার সঙ্গে যারা ছিলেন তারা আমাদের জানিয়েছেন, গত সোমবার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের উমকিয়ং থানা পুলিশ ইসহাক আলী খান পান্নার লাশ উদ্ধার করে মর্গে সংগ্রহ করে রেখেছে। লাশ এখন সেখানকার পুলিশের হেফাজতেই আছে। এ বিষয়ে ইসহাক আলী খানের সঙ্গে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারত থেকে লাশ দেশে আনার চেষ্টা করছি।
ইসহাক আলী খান পান্নার ভাগ্নে কাউখালী উপজেলার চিরাপাড়া পারসাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাইয়েকুজ্জামান মিন্টু জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর থেকেই রাজধানী ঢাকায় আত্মগোপনে ছিলেন ইসহাক আলী খান পান্না। পরে তিনি সিলেট থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার ভোর ৪টার দিকে তিনিসহ কয়েকজন সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল এলাকা দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ডাউকি এলাকায় প্রবেশ করেন। পরে শনিবার ভোররাতে মেঘালয়ের ডাউকি এলাকায় পাহাড় পার হওয়ার সময় পরে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ইসহাক আলী খান পান্না। সোমবার মেঘালয় রাজ্যের উমকিয়ং থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
ইসহাক আলী খান পান্না ১৯৯৪ সালের সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পর দলের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এবং পরে বিভিন্ন উপ-কমিটি ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী সদস্য হয়েছিলেন তিনি।
ইসহাক আলী খান পান্না পিরোজপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে পিরোজপুর-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান পান্না। পরে ১৪ দলীয় জোটগত নির্বাচনের কারণে সরে যেতে হয় তাকে। পেশাগত জীবনে বীমা কোম্পানি ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা।