রাজনীতি

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক, যে আলাপ হলো

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভিকেনতিয়েভিচ মান্টিটস্কি। বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, দ্বিপাক্ষিক সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়।

বৈঠকের পর আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, বৈজ্ঞানিক, জ্বালানি ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ওনারা জানতে চাচ্ছেন, বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যতে এই সংকট উত্তরণ নিয়ে আমরা কি চিন্তা করছি।

তিনি জানান, আমাদের তরফ থেকে পরিস্কার বলা হয়েছে যে, বিএনপি সবার সাথে সম্পর্কে বিশ্বাসী। কোনো বিশেষ দেশ বা আলাদাভাবে আমরা কাউকে দেখি না। সব দেশের সাথে সম্পর্ক থাকবে এবং বাংলাদেশের মানুষের সাথে রাশিয়ার মানুষের সম্পর্ক থাকবে। দুই দেশের সম্পর্ক থাকবে। দুইপক্ষের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

পর্যটন খাতে রাশিয়ার সাথে সহযোগিতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আমির খসরু বলেন, রাশিয়া একটি বিশাল দেশ। সেখানে ট্যুরিজমের সুযোগ আছে। এ ব্যাপারে তারা এখানে একটা অফিসও খুলতে চাচ্ছে। ভবিষ্যতে ব্যাংকের শাখা করতে চাচ্ছে। আমরা তাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছি।

খসরু বলেন, আমরা ভবিষ্যতে রাশিয়ায় বাংলাদেশের প্রোডাক্টের একটা জায়গা তৈরি করতে তাদের সহযোগিতার কথা বলেছি। সুতরাং সার্বিকভাবে দুই দেশের যে সম্পর্ক তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, যেভাবে আমরা অন্যান্য দেশের সাথে করছি।

আমির খসরু বলেন, এছাড়া বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট, নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের অবস্থান পরিস্কার করেছি। আমরা বলেছি, যত শিগগিরই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যাবে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর কথা বলেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী

তারা টাইম ফ্রেম জানতে চেয়েছেন, আমরা কোনো টাইম ফ্রেম বলিনি। আমরা বলেছি, আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এবং তাদের কার্যক্রমে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছি। যেসব রিফর্ম নিয়ে আলোচনা হবে, সেগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিফর্ম করে একটা নির্ধারিত সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে।

তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে সবাই আজকের অবস্থান জানতে চায়, আগামী দিনের অবস্থান জানতে চায়। এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আজকে যে সম্পর্ক আছে, আগামী দিনে সেই সম্পর্ক থাকবে কি না, তারা সেটা জানতে চেয়েছেন। আমরা বলেছি, পুরোপুরি সম্পর্ক থাকবে। আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে যাবে, সব দেশের সাথে থাকবে। আমরা সিলেক্টিভলি কোনো দেশকে আগে বা পরে সেভাবে দেখি না।

সবশেষে বিএনপির এই নেতা জানান, বিএনপির পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে আমরা সবার সাথে সুসম্পর্ক রেখে, দুই দেশের মধ্যে যে কম্পারেটিভ অ্যাডভানটেইজগুলো আছে-সেগুলোর সুযোগ নিতে হবে। বাংলাদেশে যেখানে কম্পারেটিভ অ্যাডভানটেইজগুলো আছে-সেগুলোর আমরা সুযোগ নিতে চাই। আমরা বলেছি, দুই দেশের সম্পর্ক হতে হবে এমন-যাতে পরস্পরে লাভবান হতে পারে। এতে পরস্পরের প্রতি সম্মানবোধ থাকতে হবে, মিউচ্যুয়াল রেসপেক্ট থাকতে হবে, মিউচ্যুয়ালি বেনিফিটেড হতে হবে। এসব বিষয়গুলো আমাদের আলোচনায় উঠে এসেছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেখানে সম্ভাবনা আছে রাশিয়াতে, রাশিয়ার যদি সম্ভাবনা থাকে এখানে-সেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা করে, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করে সম্পর্ক গড়ে উঠবে। রাশিয়ার সাথে আমাদের সেভাবে সম্পর্ক হবে।