সারা বাংলা

চাঁদপুরে কৃষিতে জলাবদ্ধতা ও বন্যায় ক্ষতি ৯১ কোটি টাকা

টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ও পার্শ্ববর্তী জেলা কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষীপুরের বন্যার পানি ডাকাতিয়া নদী দিয়ে নেমে আসায় পানি বৃদ্ধিতে চাঁদপুরে কৃষিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) জেলা কৃষি কার্যালয়ের সবশেষ ১০ দিনের এক তথ্যে এই ক্ষতির কথা জানানো হয়েছে। এর আগে জেলায় চলতি মাসের ২৮ আগস্ট বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৭১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা আবহাওয়া কার্যালয়।

কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ সময় জেলায় আবাদি ফসলের মধ্যে ছিল আউশ আবাদ, রোপা আমন বীজতলা, আমন আবাদ, শাকসবজি, পান, আখ ও বোনা আমন। মূলত দীর্ঘ প্রায় ১০ দিনেরও বেশি সময় জলাবদ্ধতায় তলিয়ে থাকায় ইতোমধ্যে অনেক ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে জেলার শাহরাস্তি, ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ ও হাইমচরের কৃষি জমি তলিয়ে গেছে। এতে এই চার উপজেলায় ধান, পান শাকসবজিসহ বিভিন্ন সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা সহজ হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, এবার চাঁদপুরে ১৪ হাজার ৬শ’ কৃষকের আউশ ফসল চাষাবাদে প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি টাকারও বেশি সমমূল্যের ৬ হাজার ১২১ মেট্রিক টন আউশের ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমনের বীজতলায় ১২ হাজার ৩২০ জন কৃষকের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকারও বেশি সমমূল্যের ৩০৮ হেক্টর জমিতে প্রাথমিক ক্ষতিসাধন হয়েছে।

আমন ধান চাষাবাদে ১০ হাজার ৭১০ জন কৃষকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা সমমূল্যের ৪ হাজার ১৪১ মেট্রিক টন উৎপাদনে ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও জেলার শাকসবজিতে বন্যা ও জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৮১ হেক্টর জমির ফসল। ফসল উৎপাদনে ৭ হাজার ৬২০ জন কৃষকের প্রায় ২৩ কোটি টাকা সমমূল্যের ৭ হাজার ৬০৫ মেট্রিক টন ক্ষতি হয়েছে। 

জেলায় পান চাষাবাদের উৎপাদনে ১০৮ জন কৃষকের প্রায় ৪ কোটি টাকা সমমূল্যের ৬৩ মেট্রিক টন ক্ষতি হয়েছে। জেলায় আখ উৎপাদনে প্রায় ১শ’ কৃষকের প্রায় ১৩ কোটি টাকা সমমূল্যের ৭৮০ মেট্রিক টন ক্ষতি হয়েছে। বোনা আমনে ১২৭ জন কৃষকের প্রায় ১৯ লাখ টাকা সমমূল্যের ৪৩ মেট্রিক টন ক্ষতি হয়েছে।

এসব তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাফায়াত আহম্মদ সিদ্দিকী বলেন, জলাবদ্ধতা ও বন্যায় কৃষিতে এটি প্রাথমিক হিসাব হলেও পানি কমার পর পূর্ণ হিসাবে ক্ষয়ক্ষতি আরও বৃদ্ধি পাবে। এখন ক্ষয়ক্ষতির হিসাবসহ ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের তালিকা করছি। যদি মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দেয় তবে কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।