সম্পদ আড়াল করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এস আলম গ্রুপের চট্টগ্রামে থাকা ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে সশরীরে উপস্থিত থেকে তাদের এই কাজে সহায়তা করেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাতে নগরের কালুরঘাট শিল্প এলাকায় (বিসিক) এস আলমের নিকটাত্মীয় মীর গ্রুপের একটি ওয়্যারহাউজ থেকে গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। গাড়ি সরানোর একটি ভিডিও ফুটেজ শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি ফাঁস হয়।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এস আলম গ্রুপের কোনো সম্পদ কাউকে না কেনার আহ্বান জানান। এই ঘোষণার পর এস আলমের প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা দামের ১৪টি গাড়ি অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে- অডি. বিএমডব্লিউ, মাসির্ডিজ, পোরশে, রেঞ্জ রোভার ইত্যাদি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এস আলম গ্রুপ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, গাড়িগুলো এস আলমের নিকটাত্মীয় মীর গ্রুপের কালুরঘাটস্থ ওয়্যারহাউজে রাখা ছিলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এস আলমের সম্পদ না কেনার আহ্বানের খবরটি প্রকাশ হবার পর জব্দ করা হতে পারে এমন আশঙ্কায় রাতেই গাড়িগুলো সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। আর এ কাজের জন্য মীর গ্রুপের দুর সম্পর্কের আত্মীয় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হকের সহায়তা নেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, বিএনপি নেতা এনামুল হক, পটিয়া উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব অহিদুল আলম চৌধুরী পিবলু এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মোহাম্মদ হোসেন নয়ন গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়ার সময় তদারকি করছেন। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়ির চালক মনসুরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সেখানে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করলেও গাড়ি সরানোর ব্যাপারে নিজের কোনো ভূমিকা ছিলো না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক। তিনি বলেন, ‘আত্মীয় হিসেবে মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুস সালামের ফোন পেয়ে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। কার গাড়ি কোথায় নেওয়া হচ্ছে এসব আমি কিছু জানতাম না।’
এ ব্যাপারে মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।