বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর সৃষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন ঘটেছে আওয়ামী লীগ সরকারের। গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। নতুন সরকারের ভাবনা ও পরিকল্পনা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন রাইজিংবিডির সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুশীল মালাকার
রাইজিংবিডি: বাংলাদেশে একটি ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাক্ষী হলাম আমরা, যার নেতৃত্বে ছিল তরুণ শিক্ষার্থীসমাজ। উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তরুণদের প্রত্যাশা কতটা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে আপনি মনে করেন?
নাহিদ ইসলাম : জনগণ আমাদের কাছে অনেক কিছু প্রত্যাশা করছে এবং সেটি খুবই ইতিবাচক। প্রায় ষোলো বছরের স্বৈরশাসনের পতনের পর একটি নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। সেই জায়গা থেকে সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। আমাদের সরকার এবং জনগণের দিক থেকে এই জাগরণ অব্যাহত রাখতে হবে। এই গণঅভ্যুত্থানের ভিতর দিয়ে আমরা যে ঐক্য পেয়েছি সেই ঐক্য এবং স্পিরিট যদি আমরা ধরে রাখতে পারি তাহলে আমি মনে করি, বাংলাদেশকে আমরা নতুনভাবে পুনরায় গঠন করতে পারব।
রাইজিংবিডি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের ব্যানারে হয়নি। এই পরিস্থিতিতে তরুণদের নিয়ে আপনারা কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের কথা ভাবছেন কি না?
নাহিদ ইসলাম : এই মুহূর্তে আমাদের কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা নেই। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছে সেটি তরুণদের নেতৃত্বে ধরে রাখতে চাই। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দল গঠন করে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। আমরা তরুণরা চাচ্ছি, দেশ গঠনের জন্য সকল সামাজিক ও রাজনৈতিক শক্তির সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে। বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করছে তরুণদের নেতৃত্বে রাজনৈতিক শক্তি তৈরি হোক। যখন নির্বাচন আসবে বা রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হবে, তখন দল গঠনের কথা বিবেচনা করা যাবে কিন্তু এখন আমাদের মূল লক্ষ্য দেশ গঠন করা এবং আমাদের অভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করা।
রাইজিংবিডি : কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ চাচ্ছে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন যা তরুণদের মাধ্যমে হতে পারে। তারা চায় তরুণরা এই পরিবর্তনে নেতৃত্ব দিক, তারা রাজনীতিতে আসুক। সে ক্ষেত্রে মূল ধারার পুরাতন দলগুলোর চেয়ে নতুন রাজনৈতিক দল কোন দিক থেকে ভিন্ন হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?
নাহিদ ইসলাম : আমরা তো এখন রাজনৈতিক দল গঠনের কথা ভাবছি না, ফলে এ বিষয়ে এখনই বলা যাচ্ছে না। তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলই হোক বা পুরাতন রাজনৈতিক দল- বাংলাদেশের সামনের রাজনীতি অবশ্যই ভিন্ন হবে এবং নতুন রূপে নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিয়ে আসতে হবে। কারণ বর্তমান তরুণদের মন জয় করতে হলে অবশ্যই পুরনো ধাঁচের রাজনীতি আর কাজ করবে না। তাই এখন যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে বা নতুন রাজনৈতিক শক্তিও যদি তৈরি হয়, তবে তাদের তরুণদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই কাজ করতে হবে।
রাইজিংবিডি : অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি যে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটলে সংখ্যালঘুরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এবারও এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যা অতীতেও আমরাদেখেছি। তারা ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থার মধ্যে আছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না?
নাহিদ ইসলাম : সংখ্যালঘু- সংখ্যাগুরু নাম দিয়ে আসলে আমাদের মাঝে বিভাজন তৈরি করা হয়েছে। পূর্বে তাদের উপর যে নিপীড়ন ও হামলা হয়েছে তার বিচার করা হয়নি। বরং তাদের একটি রাজনৈতিক ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশের যে কোনো জনগোষ্ঠীর নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার। সকলে যাতে সমান অধিকার, সমান মর্যাদা ও ন্যায়বিচার পায় সেটি নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা ইতোমধ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও তরুণ ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসেছি। তাদের আমরা সেই আস্থা ও ভরসার জায়গাটি দিয়েছি। এই অভ্যুত্থানে তাদেরও অংশগ্রহণ ছিল, সেই ঐক্যটা আমরা বজায় রাখব। আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে চাই সেখানে কোনো ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে বিভাজন থাকবে না। বরং সব ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধেই আমরা দাঁড়াব।
রাইজিংবিডি : জুলাই-২০২৪-এর এই গণঅভ্যুত্থানে আপনারা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন পেয়েছেন। এর পেছনে কী কী কারণ রয়েছে বলে আপনি মনে করেন? সব ধরনের মানুষের অংশগ্রহণে এটি ছিল একটি সফল আন্দোলন।
নাহিদ ইসলাম : এই আন্দোলন ছাত্রদের নেতৃত্বে হয়েছে বলে জনগণের অংশগ্রহণ বেশি ছিল। বাংলাদেশের মানুষ ঐতিহাসিকভাবেই ছাত্রদের উপর সেই আস্থাটা রাখে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্ররাই বিভিন্ন অভ্যুত্থানে জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। অনেক দিন ধরেই জনগণের প্রত্যাশা ছিল এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রদের একটি অভ্যুত্থান হবে। এবার সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। ছাত্ররা যখন দাঁড়িয়েছে তখন জনগণ আস্থা পেয়েছে তাদের জীবনের পরিবর্তন ঘটবে, ছাত্ররা ভীত ও আপোষকামী হবে না। এই দৃঢ় চেতনাটা দেখতে পেয়েছে বলেই জনগণ জীবন দিতে প্রস্তুত হয়েছে এবং ছাত্রদের সাথে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে।
রাইজিংবিডি : এই অভ্যুত্থানে আমরা দেখেছি যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করছে। অনেকে মনে করেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনকে বেগবান করেছে- এই বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
নাহিদ ইসলাম : আমি মনে করি, এই আন্দোলনে একটা সময় মূল শক্তি হিসেবে কাজ করেছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এটা বড় ধরনের পরিবর্তন বলা যায়। বাংলাদেশের শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণি যে এই সরকারের উপর ক্ষুব্ধ সেটি প্রমাণিত হয়েছে এবং সার্বিকভাবে আমরা একটি ছাত্র ঐক্য দেখেছি। একসময় যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সব আহত হয়েছে তখন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা রাস্তায় নেমেছে। শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণি আমাদের সমাজ ও রাজনীতির একটা নতুন পরিবর্তন চাচ্ছে। সেই আকাঙ্ক্ষাটা তাদের ভিতরে ছিল বলেই তারা নেমেছে। এর আগে ভ্যাট আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও তাদের অংশগ্রহণ ছিল। সেই ভিত্তিটা অনেক দিন ধরেই তৈরি হয়েছে এবং তার ফলাফলটা আমরা এবার দেখলাম।
রাইজিংবিডি : এই আন্দোলনে অনেক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য। তাদের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশেষ কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে?
নাহিদ ইসলাম : যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যয়ভার ইতোমধ্যে সরকার নিয়েছে এবং যারা শহীদ হয়েছেন তাদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্চে। জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন নামে একটি ফাউন্ডেশন করা হচ্ছে। এই ফাউন্ডেশন মূলত শহীদ ও আহতদের নিয়ে কাজ করবে।
রাইজিংবিডি : বিভিন্ন মহল মনে করে বর্তমান সরকারের একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
নাহিদ ইসলাম : আমরা বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে যে কোনো রাষ্ট্রের সাথে কাজ করতে চাই। ভারত আমাদের প্রতিবেশী, তাদের সাথে আমাদের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও সভ্যতাগত সম্পর্ক রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সাথে ভারতের কিছু রাজনৈতিক টানাপোড়েনও রয়েছে। বিষয়গুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে এবং ভারতকেই এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারত ঐতিহাসিকভাবে মূলত আওয়ামী লীগের সাথেই সম্পর্ক রেখেছে। রাষ্ট্রের সাথে, জনগণের সাথে সম্পর্ক তৈরি না করে একটা দলের সাথে সে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। আওয়ামী লীগ এত বছর যে ক্ষমতায় আছে এবং তিনটি ইলেকশনে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে এতে ভারতের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থন ছিল বলে বাংলাদেশের মানুষ মনে করে। ভারতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষ সেজন্য কিছুটা ক্ষুব্ধ। কিন্তু ভারত যদি শুধু আওয়ামী লীগকে বিবেচনা না করে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালিত করে তাহলে বাংলাদেশের সাথে ভারতের একটি ভালো সম্পর্ক তৈরি হবে এবং এটি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য কল্যাণকর হবে।
রাইজিংবিডি : ভারতের সঙ্গে নদীর পানি বণ্টনের ন্যায্য হিস্যা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চিন্তা করছে কি না?
নাহিদ ইসলাম : আওয়ামী লীগ সরকারের একটি নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ছিল এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য সে জাতীয় স্বার্থ বিক্রি করে বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন করেছে। তবে আমরা জাতীয় স্বার্থকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব। ভারতের সাথে বাংলাদেশের যে প্রধান সমস্যাগুলো- যেমন সীমান্ত হত্যা, নদীর পানি বণ্টন, এগুলো সমাধানের জন্য অবশ্যই আমরা উদ্যোগী হবো। বাংলাদেশের ন্যায্য প্রাপ্যতার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অবশ্যই উদ্যোগী হবে। ভারতের বাঁধের কারণে আমাদের দেশ বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে এই সমস্যা সমাধানের জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে তা নিয়ে আমরা ভাবছি। ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে এ বিষয়ে কী উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে তা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।
রাইজিংবিডি : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন স্থানে মূর্তি, ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে। এই ঘটনা ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে সমাজে। অনেকে মনে করছেন- এই আন্দোলনের পিছনে পাকিস্তান ও আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকতে পারে।
নাহিদ ইসলাম : মূর্তি ভাঙার বিষয়টি রাজনৈতিক। বাংলাদেশে শেখ মুজিবুর রহমানকে ফ্যাসিজমের আইকনে পরিণত করা হয়েছিল। শেখ মুজিবের মূর্তিকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সকল ধরনের অপকর্ম করেছে এবং ন্যায্যতা নিয়েছে। মানুষ যখন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে তখন তারা এর আইকনের বিরুদ্ধেও দাঁড়িয়েছে। সেটা ছিল একটা অভ্যুত্থানকালীন পরিস্থিতি। এখন আস্তে আস্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ভাস্কর্য ভাঙার ব্যাপারটি নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
রাইজিংবিডি : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে উঠতে পারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান। সংবিধান বিষয়ে আপনাদের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?
নাহিদ ইসলাম : আমরা তো নতুন বন্দোবস্তের কথা বলেছি। সেজন্য সার্বিক ক্ষেত্রে আমাদের সংস্কার প্রয়োজন। তাই সংবিধান সংস্কার বা পরিবর্তন ছাড়া রাষ্ট্রীয় কাঠামোর আমূল পরিবর্তন সম্ভব না। সে বিষয়ে জনমত ও অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি মিলে একত্রে একটি সিদ্ধান্তে আমাদের আসতে হবে। এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের আলোচনা চলছে। আমরা আসলে সামগ্রিকভাবেই সকল সেক্টরের সংস্কার করতে চাচ্ছি।
রাইজিংবিডি : এই সংস্কার কাজ সময়সাপেক্ষ সন্দেহ নেই। সেক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ ঠিক কতদিন হতে পারে?
নাহিদ ইসলাম : বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, লুটপাট করে বাংলাদেশকে নিঃস্ব করে দেয়া হয়েছে। আমরা সেই জায়গাগুলো পুনঃর্গঠনের চেষ্টা করছি। ফলে এখনো মেয়াদকাল বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যেই সংস্কার বা পুনঃর্গঠন করে নির্বাচনের দিকে যেতে চাই। সেক্ষেত্রে অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তি এবং সকলের সম্মতির ভিত্তিতেই আমাদের মেয়াদকাল নির্ধারিত হবে। আমরা রূপরেখা প্রণয়ন করছি, সেটি করা হলেই নিশ্চিত করে বলা যাবে এই সরকারের মেয়াদ কতদিন হবে।
রাইজিংবিডি : অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৩০ দিনও পার করেনি। অথচ এরই মধ্যে বিভিন্ন মহল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করছে, দাবি আদায়ে তারা সচিবালয়েও গিয়েছে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
নাহিদ ইসলাম : মানুষ আসলে দীর্ঘ সময় ধরে বঞ্চিত ছিল, কথা বলার সুযোগ পায়নি। এখন যেহেতু একটু কথা বলার সুযোগ তৈরি হয়েছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে, তাই তাদের গত পনেরো বছরের দাবি-দাওয়া, ক্ষোভ যা জমা ছিল তা প্রকাশ করছে- এটা স্বাভাবিক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি তাদের আস্থা আছে বলেই তারা কথা বলছে এবং দাবি জানাচ্ছে। আমরা এটিকে সাধুবাদ জানাই। তবে এটা স্বাভাবিক যে, পনেরো বছর ধরে তৈরি হওয়া সমস্যার রাতারাতি সমাধান সম্ভব নয়। আমরা সকলের দাবিগুলোই আমলে নিচ্ছি এবং সকলকে ধৈর্য্য ধরার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা যে রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে চাই তার মাধ্যমে ধীরে ধীরে সকলেই উপকৃত হবেন। সকলের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া আমরা বিবেচনা করে যথাসময়ে ব্যবস্থা নেব।