সারা বাংলা

সাভারে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

ঢাকার সাভারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজিকালে মো. আজিজ (২৭) নামে এক তরুণকে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) আশুলিয়া থানায় বাদী হয়ে ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে মামলা করেন স্থানীয় শ্রীপুর এলাকার ব্যবসায়ী মানিক মিয়া।

গ্রেপ্তার মো. আজিজ (২৭) আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের মধুপুর তালটেকী এলাকার মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে। তিনি বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শনিবার (৩১ আগস্ট) দিবাগত রাতে আজিজ ও তার সঙ্গী জাহাঙ্গীরসহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে শ্রীপুর বৃহত্তর পাইকারি কাঁচা বাজারে ভুক্তভোগী মানিক মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। এ সময় তারা নিজেদের সাভার-আশুলিয়া এলাকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীর বাসায় অবৈধ অস্ত্র ও গুলি আছে জানিয়ে তল্লাশি করতে চান। এ সময় নেতৃত্বদানকারী আজিজ ভুক্তভোগীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেন। পরে তারা ভুক্তভোগী মানিক মিযার বাসায় তল্লাশি করে কোনো কিছু না পেয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং চার দিনের সময় বেঁধে দেন। উক্ত সময়ে টাকা না দিলে ভুক্তভোগীকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলায় আসামি করা হবে বলে হুমকি দেন। রাতে অভিযুক্ত আজিজকে ডেকে নেয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণ হলে আজিজকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, মানিক মিয়ার কাছে এর আগেও প্রতারক আজিজের সহযোগী জাহাঙ্গীর খান হত্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় জাহাঙ্গীরকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দেন।  

মামলার বাদী ভুক্তভোগী মানিক মিয়া বলেন, ‘আমাকে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য আজিজ নিজেকে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয়ে হুমকি দিয়েছেন। পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে ডাকা হলে তার প্রতারণার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের সামনে প্রমাণিত হয়। পরে তাকে মারধর করে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, কয়েক দিন আগেও ছাত্র হত্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে আজিজ তার কাছে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি থানায় সুযোগ বুঝে পুলিশের উপর চাপ সৃষ্টি করে নিরাপরাধ মানুষদের নাম জড়িয়ে এ ধরনের অপকর্ম করে আসছিলেন।

প্রতারক আজিজের এলাকাবাসী জানান, গত জাতীয় নির্বাচনেও আজিজ আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয়কর্মী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী মুরাদ জং এর ঈগল মার্কার পোস্টার লাগামোর কাজ করেছেন। ওই সময় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামের লোকজন তাকে মারধর করে। গণমাধ্যমেও বিষয়টি প্রচারিত হয়। হঠাৎ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনার সুযোগ নিয়ে থানায় যাওয়া শুরু করেন আজিজ। এরপর নিজেকে ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে এলাকার বেশ কিছু মানুষকে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, প্রতারণার অভিযোগে আজ থাানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আজিজ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।