উদ্যোক্তা/ই-কমার্স

শখের বসে উদ্যোক্তা সুস্মিতা

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়টি আমাদের সমাজের অনেক মানুষ এখনও ভালো চোখে দেখেন না।– এই বিষয়টি নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ভয়ের কারণ। সুস্মিতাও ভয় পেয়েছিলেন। বিশেষ করে মানুষের কটুক্তির শোনার ভয় ছিল তার। ধীরে ধীরে সেই ভয় কাটিয়ে হয়ে উঠেছেন একজন উদ্যোক্তা।

পুরো নাম  জান্নাতুল ফেরদৌস সুস্মিতা। তার বেড়ে উঠা রংপুরে।সুস্মিতার গ্রামের বাড়ি বরিশাল হলেও, বাবার চাকরিসূত্রে বেড়ে উঠেছেন রংপুর শহরে। সুস্মিতা  পড়াশোনা শেষ করেছেন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ থেকে।

ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকি করতে ভালোবাসতেন সুস্মিতা। মায়ের হাত ধরে কিছুদিন আর্টস্কুলেও গিয়েছিলেন তিনি। সুস্মিতা আঁকতে ভালোবাসলেও ক্রাফটিং তেমন বুঝতেন না। ক্রাফটিং শেখার উপায় খুঁজছিলেন তিনি। এরপর ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখে ক্রাফটিং শিখতে শুরু করেন।

সুস্মিতা লিপার্ট (রাজস্থানের এক ধরনের আর্ট) শুরু করেন। নতুন সংসার সাজাতে গিয়ে বুঝলেন প্রয়োজনীয় অনেক কিছুতো নিজেই বানানো যায়। নিজ চেষ্টায় কফি মগ, ক্যান্ডেল হোল্ডার, স্পুন হোল্ডার, টি ট্রে, এস্ট্রে, ন্যাপকিন রিংসহ নানা ধরনের পণ্য বানাতে শুরু করেন। এরপর স্বামীর উৎসাহে ফেসবুকে ‘মোয়ের’ নামে একটি  পেইজ খোলেন তিনি। এর অর্থ দামী ফেবিক্স। শব্দটি ফরাসী ভাষা থেকে নেওয়া। 

মোয়ের পেইজের মাধ্যমে প্রথমে পরিচিত ক্রেতারা সুস্মিতার হাতে বানানো পণ্য কিনতে শুরু করেন। এরপর অপরিচিতদের কাছ থেকেও পণ্যের অর্ডার আসতে শুরু করে। অনেকে প্রি অর্ডারও করেন।

সুস্মিতা জানান, শখের বসে উদ্যোক্তা হয়েছেন তিনি। ঘর সামলে ব্যবসার কাজে সময় দেন। দিনে দিনে তার পণ্যের ক্রেতা বাড়ছে। এই ব্যবসা থেকে মাসে আয় করেন গড়ে ১৫ হাজার টাকা। 

সুস্মিতা বলেন, ‘ অনলাইনে ব্যবসা করা সমাজের অনেক মানুষ ভালোভাবে দেখে না। এই বিষয়টি আমাকে আহত করেছিল। মাঝে কিছুদিন কাজ বন্ধও রেখেছিলাম। কিন্তু এই সময়টাতে আমার হাজবেন্ড আমাকে সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট দিয়েছে। সে আমাকে সবকিছু পজিটিভলি বুঝিয়েছে। অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে ‘শো ইউর বুক’ বইটি।’

নতুন উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়ে সুস্মিতা বলেন,  ‘উদ্যোক্তা হতে গেলে আপনার কঠিন মনোবল থাকতে হবে এবং সাহসী হতে হবে। মানুষের কটু কথা উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে পারলে আপনিও সফল হবেন।’