সারা বাংলা

ময়মনসিংহে ৩ জনের মৃত্যু: মামলায় শেখ হাসিনা-রেহানাসহ আসামি ৭১১

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনজন নিহতের ঘটনায় আদালতে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ৭১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ডৌহাখলা ইউনিয়নের কৃষক দলের নেতা আবুল কাশেম বাদী হয়ে ৯৭ নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ২০০-৩০০ আসামি করে মামলার আবেদন করেন। বিচারক আসমা সুলতানা মামলার আবেদনটি আমলে নিয়ে গৌরীপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলা একীভূত করে জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ডৌহাখলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রহিম আকন্দ বাদী হয়ে ৬৪ জন নামে ও অজ্ঞাত ২০০-২৫০ জনকে আসামি করে মামলার আবেদন করেন। একই বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে গৌরীপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলা একীভূত করে জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। 

চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

মামলার নথি থেকে জানা যায়, দুইটি মামলাতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, সাবেক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও ময়মনসিংহ-৪ সদর আসনের সাবেক এমপি মুহিত উর রহমান শান্ত, ময়মনসিংহ- ৩ গৌররীপুর আসনের সাবেক এমপি নিলুফার আঞ্জুম পপি, গৌরীপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা, গৌরীপুরের সাবেক পৌর মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামসহ দুই মামলায় ১৬১ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা ৫৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

মামলার নথিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০ জুলাই জেলার গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়া এলাকায় বিপ্লব হাসান (২০), নূরে আলম সিদ্দিকী ওরফে রাকিব (২০) ও জোবায়ের আহমেদ (২১) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। বিপ্লব কলতাপাড়া বাজার এলাকায় চূড়ালি গ্রামে বাসিন্দা ও স্থানীয় তেলের মিলের শ্রমিক, নূরে আলম সিদ্দিকী রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও মাদ্রাসা শিক্ষক এবং জোবায়ের মইলাকান্দা ইউনিয়নের পূর্ব কাউরাট গ্রামের বাসিন্দা ও শম্ভুগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী ছিলেন। 

সেদিন বিকেলে ময়মনসিংহ কিশোরগঞ্জ সড়কে কলতাপাড়া বাজারে তালু স্পিনিং মিলের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় তিনজন। এ ঘটনায় আহত আরও অন্তত ২০ জন। পরে আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই তিন যুবক মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারের সদস্যদের সাক্ষী করে আদালতে মামলা করা হয়। 

এদিকে তিন যুবক মৃত্যু ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা না করায় গৌরীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল আলম বাদী হয়ে ২২ জুলাই থানায় একটি মামলা করেন। অজ্ঞাত পরিচয় ৪-৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলার ধারায় সেটি নথিভুক্ত হয়।